ঢাকা, রবিবার, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কালাইয়ে নবান্ন উৎসবে জমে উঠেছে মাছের মেলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
কালাইয়ে নবান্ন উৎসবে জমে উঠেছে মাছের মেলা

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে নবান্ন উৎসব ঘিরে মাছের মেলা বসেছে। থরে থরে সাজানো রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, বিগহেড কার্প, বোয়ালসহ হরেক রকমের দেশি মাছ।

 

মেলায় সারি সারি দোকানে চলছে হাঁকডাক, দরদাম। মিলছে এক কেজি থেকে শুরু করে ২০ কেজি ওজনের মাছ। লোকজনও উৎসাহ নিয়ে দেখছেন। কেউ কেউ কিনছেন।

জানা গেল, নবান্ন উৎসবে প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের ৩ তারিখে এখানে মাছের মেলা বসে। মেলায় অংশ নেন উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, মাদারপুর, হাটশর, হারুঞ্জা, পুনট, বেগুনগ্রাম, পাঁচগ্রামসহ আশপাশের ২৫-৩০ গ্রামের মানুষ। উৎসবে প্রতি বাড়িতে মেয়ে জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকে নিমন্ত্রণ করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকেও লোকজন আসেন মেলায় মাছ কিনতে।

মেলায় বিশালাকৃতির একটি মাছ মাথায় তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন কালাইয়ের হাতিয়র গ্রামের মাছ বিক্রেতা গোলাম রব্বানী। ১৫ কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছটির দাম হাঁকেন ১১ হাজার টাকা। ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিগহেড কার্প ও সিলভার কার্প মাছ বেশি বিক্রি হয়েছে। প্রকারভেদে রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজিদরে।

কথা হয় ক্রেতা সিরাজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, আব্দুল আলিমসহ বেশ কয়েক জনের সঙ্গে। প্রত্যেকে জানান, এবারের মেলায় প্রচুর মাছ উঠেছে কিন্তু দাম একটু বেশি।

হারুঞ্জা গ্রামের নাজমা বেগম নামে এক নারী মেয়ে, জামাই ও ছেলেসহ মেলায় এসেছেন মাছ কিনতে। তিনি বড় একটি মাছ কিনেছেন ৪ হাজার টাকায়। মেয়ে-জামাইসহ নিকট আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ করেছেন। আর তাদেরই নতুন চালের ভাত এবং পছন্দের মাছ দিয়ে খাওয়াবেন বলে জানান।

মাছ ব্যবসায়ী রুহুল আমীন, এনামুল হক, আলমগীর হোসেন, আনোয়ার হোসেন জানান, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বিক্রি সেই তুলনায় কম। তারপরও যেটুকু হয়েছে, সব খরচ বাদে তাতে লাভ ভালোই থাকবে।

মৎস্য খামারি সাদাত মণ্ডল বলেন, মেলা সামনে রেখে এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে রেখেছিলাম। তাই এবার পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে পারছি।

কালাই পৌর শহরের হাসপাতাল এলাকা থেকে রুপালী বেগম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাছের মেলায় এসেছেন। প্রতি বছর মেলায় আসেন তিনি। এবার সঙ্গে এনেছেন বড় ভাইয়ের স্ত্রী রোজিনাকে। তারা দুজন মিলে দরদাম করে ৬৫০ টাকা কেজি দরে ৪ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের একটি কাতলা মাছ কিনেছেন।

তিনি বলেন, মেলায় বহু ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের দেখে ভালো লাগছে। আসলে বাঙালি জীবন থেকে উৎসবগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এ রকম উৎসবে অংশ নিতে পারলে ব্যস্ততম জীবনে কিছুটা হলেও প্রশান্তি আসে।

পাঁচশিরা মাছের মেলার ইজারাদার গোলাম আজম জানান, প্রতি বছর এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসব বিরাজ করে। আজও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এ মেলায় এবার ৭০-৮০টি স্টলের মাধ্যমে দিন শেষে এখানকার ব্যবসায়ীরা অন্তত কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা করবেন।

এই মেলাকে ঘিরে সব ধরনের শান্তি-শৃঙ্খলা বজার রাখার জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও পৌর প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।