ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাইয়ের চাঁদাবাজির অভিযোগ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাইয়ের চাঁদাবাজির অভিযোগ!

ফরিদপুর: ফরিদপুরে আপন বড় দুই ভাইয়ের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মো. নাছির উদ্দিন হীরা নামে তাদের ছোট ভাই। পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে তার নামে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন হীরা।

রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা শহরের আলীপুর এলাকায় হাসিবুল হাসান লাবলু সড়ক সংলগ্ন তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে করা হয়।  

হীরা ওই এলাকার মৃত আবু তাহের মিয়ার ছোট ছেলে।  

সংবাদ সম্মেলনে ভাইদের হয়রানি থেকে মুক্তি এবং পাওনাকৃত টাকা ফেরত পেতে ফরিদপুর পুলিশ সুপার (এসপি) ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সহযোগিতা কামনা করেছেন হীরা।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছির উদ্দিন হীরা বলেন, আমরা চার ভাই ও সাত বোন। মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার কুমারভোগ গ্রামে আমাদের অঢেল পৈত্রিক সম্পত্তি ছিল। ওই সম্পত্তি দীর্ঘদিন অন্যের দখলে থাকায় আমি গত চার বছর আগে উদ্ধারের জন্য পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে কথা বলি এবং তারা সম্মতি দেন ও যাবতীয় খরচের জন্য সমানভাবে দিতে রাজিও হয়। আমি সেই মোতাবেক কুমারভোগ গ্রামে গিয়ে দখলদারদের সঙ্গে কথা বলি এবং তাদের সঙ্গে মীমাংসার মাধ্যমে জমিগুলো ফিরে পাই। তাতে আমার ব্যক্তিগত ৬ শতাংশ জমি তাদের লিখে দেই এবং দীর্ঘদিনের খাজনা পরিশোধ করি। সব মিলিয়ে আমার প্রায় ২২ লাখ টাকা খরচ হয়। এরপর সব ভাই-বোনকে জানালে তারা সমানভাবে ২ লাখ টাকা করে আমাকে দিতে রাজি হন।  

তিনি বলেন, ওই জমিগুলো উদ্ধারের পর আমরা সব ভাই-বোন সমানভাবে বিক্রি করে দেই। এরপর আমার ৯ ভাই-বোন ২ লাখ টাকা করে ১৮ লাখ টাকা ফেরত দেন। কিন্তু আমার বড় ভাই মুশফিকুর রহমান আজিম ও সেজো ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন মুক্তা টাকা ফেরত দিতে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। তাদের কাছে টাকা চাইতে গেলে আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করতে শুরু করেন। সর্বশেষ গত ১৬ জানুয়ারি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় আমার নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ দেন তারা। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এরপর আমার বাসায় পুলিশও এসেছিল।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর নিউ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় একটি দোকান ঘর বিক্রি করে দিয়েছেন আমার বড় দুই ভাই। সেখানেও আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তারা। সেই দোকান বিক্রির টাকা আমাকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও আজ পর্যন্ত দেননি। তাই আমি ফরিদপুর পুলিশ সুপারের মাধ্যমে দুই ভাইয়ের কাছে পাওনাকৃত চার লাখ টাকা ও দোকান বিক্রির টাকা পেতে সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোয়াজ্জেম হোসেন মুক্তা বলেন, আমাদের কাছে হীরা কোনো টাকা পাবেন না। অন্য ভাই-বোনরা তাকে টাকা দিলে আমরা কী করব। ছোট ভাই হিসেবে হীরা আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন এবং আমার কাছে আড়াই লাখ টাকা দাবি করেছেন।  

অপরদিকে মুশফিকুর রহমান আজিম বলেন, টাকা পেলে টাকা দেব কিন্তু, কীসের টাকা পাবে সে বিষয়ে আমাদের প্রমাণাদিসহ টাকার হিসাব দিতে হবে।  

এ বিষয়ে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি তাদের জমিজমা সংক্রান্ত হিসাব-নিকাশ নিয়ে পূর্ব বিরোধ। তবে, এটা কোনো চাঁদাবাজির বিষয় না। ছোট ভাই হীরা তার বড় দুই ভাইয়ের কাছে জমিজমা নিয়ে টাকা পাবেন, সেই টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু হীরার কাছে কোনো প্রমাণাদি না থাকায় দুই ভাই পাওনা টাকা দিতে রাজি হচ্ছেন না। এ নিয়ে নিউ মার্কেট এলাকায় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডাও হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দুই ভাই থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।