ঢাকা: ফিলিস্তিনিরা শুধু শান্তিতে নিজেদের জায়গায় থাকতে চায় বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সেখানকার রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে ‘ফিলিস্তিনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও শান্তির অন্বেষা’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, আমাদের যুদ্ধ প্রথমত ইসলাম ও আল আকসা রক্ষার জন্য। ইসলামের শিক্ষা, যত সময়ই লাগুক না কেন, যত ত্যাগই আমাদের স্বীকার করতে হোক না কেন জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদ একদিন স্বাধীন হবেই।
তিনি বলেন, বিশ্ববাসী দেখছে কীভাবে ফিলিস্তিনিরা ভুগছে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর কপটতা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। আমরা জানি, অবিচার দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে না, শান্তি আসবেই। ফিলিস্তিনিরা যে পরিস্থিতি মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, এভাবে বিশ্বের আর কোনো দেশে যায়নি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে দুটি পথ খোলা আছে। হয় সব মেনে নিয়ে নিজেদের জায়গা ছেড়ে চলে যেতে হবে অথবা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। আমরা দ্বিতীয়টি বেছে নিয়েছি। আমরা ঠিক তা-ই করেছি, যা বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে করেছিল। আমরা শুধু শান্তিতে বসবাস করতে চাই, নিজেদের পরিচালিত দেশে থাকতে চাই। যেখানে কারো দখলদারত্ব থাকবে না, স্বাধীন পেশা থাকবে, অন্যান্য দেশের সাথে একটি সু-সম্পর্ক থাকবে।
ইউসুফ রমাদান বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনবাসীর পাশে আছে, সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে, যা ফিলিস্তিনি ইতিহাসে সবসময় লেখা থাকবে। চার হাজার মাইল দূরে থাকা বাংলাদেশ আমাদের সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে এবং ভ্রাতৃত্ববোধের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখছে। আমরা সবসময় তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের বাচ্চাদের শিখিয়ে যাব, জানিয়ে যাব।
তিনি বলেন, আপনারা (বাংলাদেশ) আমাদের (ফিলিস্তিন) সমর্থন করা চালিয়ে যান, থেমে যাবেন না। সম্মিলিতভাবে চেষ্টো চালিয়ে যান। ওয়াদা করছি, আমরা আমাদের সংগ্রাম কখনো থামাব না, আমাদের শক্তির সবটুকু ব্যবহার করে এ যুদ্ধ চালিয়ে যাব।
ইসরায়েল এখন চাপে আছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তারা এ চাপের মধ্যেই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত তারা সমাধান না মেনে নেয়।
রাষ্ট্রদূত জানান, ফিলিস্তিনে যথেষ্ট পরিমাণ খাবার, ওষুধ ও জ্বালানি নেই। থাকার জন্য ঘর নেই। গাজার অনেক মানুষ এক বেলা খাবার খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। গাজা পবিত্র ভূমি, তাই আমাদের এত ত্যাগ।
বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এম এম আকাশ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি নিজামুল হক, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম এ সবুর, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, মমতাজ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ মাহমুদুর রহমান বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রতন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন, তরুণ গবেষক ড. সঞ্জীব চৌধুরী।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৪
এসসি/আরএইচ