চাঁদপুর: চাঁদপুর-চট্টগ্রামে রুটে চলমান আন্তঃনগর ট্রেন মেঘনা এক্সপ্রেসে চড়ে চলতি বছরের মার্চেই কক্সবাজার যাওয়া যাবে বলে জানিয়েছিলেন রেলের পরিচালক (ট্রাফিক কন্ট্রোল) মো. মিজানুর রহমান।
এবার রেলওয়ে চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম জানালেন, বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে।
তিনি বলেন, কবে থেকে চাঁদপুর-কক্সবাজার ট্রেন চালু হবে এটা এখনই বলতে পারছি না। তবে আমাদের কক্সবাজার স্টেশনের কাজ এখন শেষ পর্যায়। সেখানে কিছু ব্রিজ ও অবকাঠামোর কাজ চলমান। সবকিছু শেষ হওয়ার পর আমরা আশাবাদী অচিরেই চাঁদপুর-কক্সবাজার ট্রেন চালু হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুর রেলস্টেশনের অবকাঠামোসহ তিন নদীর মোহনার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মহাব্যবস্থাপক বলেন, আমাদের যে পরিকল্পনা অর্থাৎ যাত্রীদের চাহিদার আলোকে ট্রেনের সময় সূচি নির্ধারণ করি। এটি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে ভবিষ্যতে এই রুট বর্ধিত করতে পারি। তবে দীর্ঘদিন যেহেতু চাঁদপুর-চট্টগ্রাম যাত্রী চলাচল করছে, সেখানে হুট করে চাঁদপুর থেকে কক্সবাজার ট্রেন চালু করলে চট্টগ্রামের যাত্রীদের আসন কীভাবে দেওয়া হবে! এছাড়া একটি নতুন রুট চালু করার জন্য নতুন ইঞ্জিন ও লোকোমাস্টারের প্রয়োজন আছে। এর সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত আছে।
আপাতত মেঘনা এক্সপ্রেসটি আরও আধুনিক করার পরিকল্পনা আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, এই ট্রেনটিতে এখন যাত্রীদের কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। এটি আধুনিক করা হবে, তবে সময় লাগবে। কারণ পদ্মা সেতু নির্মাণের পরে লঞ্চে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি। তবে আমরা সব সময় যাত্রীর চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।
এসময় চাঁদপুরের তিন নদীর মোহনার সৌন্দর্য আরও বাড়ানো হবে বলেও জানান রেলওয়ে চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক।
তিনি জানান, বড় স্টেশনের শ্রীবৃদ্ধির জন্য আরও নতুন নতুন গাছ লাগানো হবে। এছাড়াও সবুজায়ন করার লক্ষ্যে এখানকার ভূমিতে ঘাস লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। একইসঙ্গে এখানে হাঁটার জন্য ফুটপাত বসানো হবে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য থাকবে ক্যাফেটেরিয়া। যাতে করে আগত দর্শনার্থীদের বিভিন্নভাবে সেবা দেওয়া যায়।
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে রেলওয়ের সম্পত্তি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনার কথাও জানান মহাব্যবস্থাপক।
এসময় রেলওয়ে চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম, প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী, বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) মো. হানিফ, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তারেক মো. ইমরান, সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ ও পূর্ত) লাকসাম মো. লিয়াকত আলী মজুমদার, রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের চিফ ইনচার্জ মো. সালামত উল্লাহ, চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার (ভারপ্রাপ্ত) সোয়াইবুর শিকদার উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মহাব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তিন নদীর মোহনাসহ স্টেশনের উন্নয়ন কাজ ও অবৈধ স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে চাঁদপুর-কক্সবাজার রুটে ট্রেন সার্ভিস চালু করতে আবেদন করা হয়। ফোরামের আবেদনের সঙ্গে একমত পোষণ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। তার ভিত্তিতে এই রুটে ট্রেন সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয় রেল বিভাগ।
এর অংশ হিসেবে গত ৭ ফেব্রুয়ারি রেলের পরিচালক (ট্রাফিক কন্ট্রোল) মো. মিজানুর রহমান জানান, ফোরামের আবেদন রেলপথ মন্ত্রণালয় গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। মেঘনা ট্রেনে নতুন র্যাক সংযোজন করে মার্চের মধ্যেই কক্সবাজার পর্যন্ত এক্সপ্রেসটির রুট বর্ধিত করা হবে।
এছাড়া ফোরামের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে চাঁদপুরকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানো হয়। বিশেষ করে বড় স্টেশনকে আরও চিত্তাকর্ষক ও পর্যটনমুখী করতে নানা সময়ে দাবি জানিয়ে আসছে সাংবাদিকদের এ সংগঠনটি।
আরও পড়ুন >> ‘চাঁদপুরের তিন নদীর মোহনার সৌন্দর্য আরও বাড়ানো হবে’
বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪
এসএএইচ