ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

তরমুজে স্বপ্ন বুনছেন সোনাগাজী চরের কৃষক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৪
তরমুজে স্বপ্ন বুনছেন সোনাগাজী চরের কৃষক

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীর বিস্তীর্ণ চরে আবাদ হচ্ছে উৎকৃষ্ট মানের সুমিষ্ট তরমুজ। গত কয়েকবছর ব্যাপক লাভ হওয়ায় চলতি মৌসুমে বেড়েছে আবাদ।

ফলনের আশায় মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে চাষিদের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে শত কোটি টাকার বেশি।

ফেনী নদীর তীরের সমুদ্র উপকূলীয় জনপদ সোনাগাজী। ধান, মাছ ও বিস্তীর্ণ ভূমির এ অঞ্চলের সমৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে অর্থকরী ফসল তরমুজ। চরের হেক্টরের হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে সুমিষ্ট এ ফল। মাটির গুণগত মান ভালো হওয়ায় এখানকার উৎকৃষ্ট তরমুজ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সারা দেশে। চরের কৃষি অর্থনীতির পালে লেগেছে নতুন হাওয়া।

এ চরে বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ আবাদ বেশি দিনের নয়। ২০১৭ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকা থেকে আগত এক কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে সোনাগাজীর চরদরবেশ ইউনিয়নে তরমুজ চাষ করেন। ওই বছরে তার লাভজনক সফলতা দেখে ২০১৯ সালে ৮ থেকে ১০ জন কৃষক তাদের জমিতে রবি মৌসুমে তরমুজ চাষ করে লাভবান হন। সেই থেকে বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু।

চলতি মৌসুমে ৫৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুজ। এ হতে কৃষকের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে শত কোটি টাকার বেশি। গত মৌসুমে ৬০ কোটি টাকার বেশি তরমুজ বিক্রি করা হয়েছিল। এর আগের মৌসুমে বিক্রি হয়েছিল ২৬ কোটি টাকার তরমুজ।

সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন, চরচান্দিয়া, চরদরবেশ ইউনিয়ন, সোনাগাজী সদর ইউনিয়ন, আমিরাবাদ ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের ফসলের মাঠে চলছে তরমুজ আবাদের মহাযজ্ঞ। চাষিদের ব্যস্ততায় ক্ষেত ঘিরে বিরাজ করছে প্রাণচাঞ্চল্য। অনেক জমিতে গাছে এসেছে ফুল-ফল। সার, পানি ছিটানো আর বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

কৃষকরা বলছেন, ধান ও অন্য ফসলের চাইতে তরমুজে লাভ বেশি। সোনাগাজীর মাটিও তরমুজের জন্য ভালো। সে কারণেই তরমুজ আবাদে ঝুঁকেছেন তারা।

আব্দুল্লাহ আল নোমান নামের এক কৃষক বলেন,  চরের এ মাটিতে আগে তরমুজ চাষ হতো না গত কয়েক বছর চাষ হচ্ছে। বৃষ্টি-খরা না থাকলে কৃষক লাভবান হয়ে থাকে। আমরাও লাভের আশা করছি।  

বছরের এ সময়ে তরমুজ পুরো এলাকার অর্থনীতিতে রাখে ইতিবাচক ভূমিকা। তরমুজ চাষে অর্থনৈতিক পরিবর্তন এসেছে অনেকের। এমনটা মনে করছেন স্থানীয়রা। চরের এসব তরমুজ কিনতে অনেকেই আসছে শহর থেকে।

নজরুল ইসলাম সাইমুম নামে এক কৃষক জানান, তরমুজ চাষাবাদ, ফলন উঠানো ও পরিবহনকে ঘিরে এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠে। বিশাল জনগোষ্ঠী এটার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।  

কৃষি বিভাগ বলছে প্রতিবছর সোনাগাজীর চরসহ ফেনীর ছাগলনাইয়ার ফেনী নদীর চরের ঘোপাল, শুভপুর, ফুলগাজী, পরশুরাম ও দাগনভূঞাঁয় বাড়ছে তরমুজের আবাদ। ফলটি চাষের জন্য মাটির গুণগত মান ভালো হওয়ায় ফলনও ভালো মিলছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, তরমুজ ফেনীর একটি অন্যতম অর্থকরী ফসল হয়ে উঠছে। প্রতিবছর তরমুজের আবাদ বাড়ছে।  

চলতি মৌসুমে পুরো ফেনী জেলায় তরমুজ আবাদ হয়েছে ৬২৬ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সোনাগাজীতেই রয়েছে ৫৭৫ হেক্টর জমি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৪
এসএইচডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।