খুলনা: বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য বেগম হাবিবুন নাহার বলেছেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথে বাধা অসংখ্য। নারীকেই সে বাধা অতিক্রম করার শক্তি ও সাহস অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ভূমিকায় নারীরা রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সঠিক পথে রয়েছেন। প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার এ পথে হোঁচট খেয়ে থেমে গেলে হবে না। লক্ষ্য অর্জনে সব বাধা দূর করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) নগরীর সিটি ইন হোটেল মিলনায়তনে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ে সংসদ সদস্য ও অপরাজিতাদের মধ্যে সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সুইজারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহযোগিতা, হেলভেটার সুইস ইন্টার কো-অপারেশন বাংলাদেশের সমন্বয়ে, রূপান্তরের আয়োজনে অপরাজিতা: নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন শীর্ষক সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সমাজের সব ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। নারীকেই এ লক্ষ্য অর্জনে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। পুরুষ এখানে সহযোগীর ভূমিকা পালন করবেন।
বিশেষ অতিথির ভাষণে খুলনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল বলেন, নারীরা রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন। রাজনীতির মাঠে নারীরা সামনের সারিতে থাকেন। দলও নারীদের সেভাবে মূল্যায়ন করছে। আমাদের গঠনতন্ত্রে নারী সম্পৃক্তের বিষয়টি রয়েছে। মাঠপর্যায়ে এটি বাস্তবায়ন করতে হলে নারীদের বেশি বেশি দলের সাধারণ সদস্য পদে যেতে হবে। নারীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেশি বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে। আমাদের চেষ্টা থাকে, যারা সক্রিয় তারা যেন দলে যুক্ত হয়। দলের যারা অবদান রাখেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের মূল্যায়ন করেন।
খুলনা বিভাগীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্ক সভাপতি রিজিয়া পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন জাতীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সদস্য সেলিনা আক্তার পিয়া, বাগেরহাট জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্ক সভাপতি শরিফা খানম ও খুলনা জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক আকলিমা খাতুন তুলি।
রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে থেকে বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা কমিটির সহ-সভাপতি নিমাই চন্দ্র বৈরাগী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বাগেরহাট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোজাফ্ফর হোসেন আলম, জাতীয় পার্টি খুলনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মল্লিক হাদিউজ্জামান ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি খুলনা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন দিলু।
জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তৃতা দেন তেরখাদা মধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মো. মোহসিন, ফুলতলা জামিরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম সরদার, বটিয়াঘাটা বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. আসাবুর রহমান, বাগেরহাট বাড়ৈইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়ল প্রমুখ।
অপরাজিতাদের মধ্যে থেকে দাবি তুলে ধরে বক্তৃতা দেন বন্দনা রায়, পপি ব্যানার্জী, সুস্পিতা গাইন, সাইদা ইসলাম নয়ন, তাহেদা নাজমা মিতু, তাছলিমা আক্তার বৃষ্টি, পলি আক্তার, রহিমা খাতুন, উল্লাসিনী সরকার, কনিকা গোলদার, মাধবী সরকার, তানিয়া খাতুন, তাছলিমা খাতুন ছন্দা, লিপিকা রানী বৈরাগী, রিনা পারভীন প্রমুখ।
খুলনা বিভাগীয় অপরাজিতা নির্বাহী সদস্য রোকসানা পারভীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন মোংলা উপজেলার চাঁদপাই নিউয়নের অপরাজিতা অর্পা মল্লিক।
উপস্থাপিত ধারণাপত্রে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় কমিটিতে কমপক্ষে ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ (৩৩ শতাংশ) নারীকে দলীয়ভাবে মনোনয়ন বা সমর্থন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
রাজনৈতিক বিভিন্ন দলের কমিটিগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্মেলনের আয়োজন করে উপজেলা ও জেলার মূল কমিটিতে কমপক্ষে ৩৩ শতাংশ নারীর অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ একাধিক পদে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে দলের মূল কমিটিতে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদ নারীকে দেওয়াসহ মোট ছয়টি দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৪
এমআরএম/আরএইচ