ঢাকা: প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন মালয়েশিয়াগামী অন্তত ৩০ জন নির্মাণ শ্রমিক। তারা সবাই মাস বাংলা ওভারসিজ নামের একটি এজেন্সির মাধ্যমে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন।
সোমবার (২৭ মে) দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা ফ্লাইটের নতুন সময়সূচি জানতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা ৬টায় এয়ার ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে করে ঢাকা থেকে ভারতের চেন্নাই হয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের বৈরি আবহাওয়ার কারণে ফ্লাইট ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই সেটি বাতিল করা হয়। এরপর আর ফ্লাইটের নতুন তারিখ বা সময় সূচি কিংবা যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থার কিছুই জানায়নি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। অথচ আগামী ৩১ মে তারিখের মধ্যে কর্মস্থলে পৌঁছাতে না পারলে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এই ফ্লাইটে করেই নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল কুমিল্লার ইব্রাহিম মিয়ার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, একটি এজেন্সির মাধ্যমে ৩০ জন ওই ফ্লাইটে করে আমাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। রোববার সন্ধ্যা ৬টায় আমাদের ফ্লাইট ছিল। সেই অনুযায়ী আমরা দুপুরের দিকে বিমানবন্দরে পৌঁছাই। তখনও আমাদের ফ্লাইট বাতিলের কথা জানানো হয়নি। বিকেল ৪টার সময় ফ্লাইট বাতিলের কথা জানায় এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারা নতুন করে ফ্লাইটের সময় এখনও আমাদের জানায়নি।
তিনি আরও বলেন, এজেন্সি বলছে, যদি আমরা ৩১ তারিখের আগে মালয়েশিয়া পৌঁছাতে না পারি, তাহলে যে প্রতিষ্ঠান চাকরি দিয়েছে, তারা আমাদের গ্রহণ করবে না। এখন আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছি। ফ্লাইটের নতুন সময় না জানা পর্যন্ত আমরা বিমানবন্দর ছেড়ে যাব না।
এই বিষয়ে মাস বাংলা ওভারসিজের বিএমইডি প্রতিনিধি সবুজ হোসেন তালুকদার বলেন, ফ্লাইট ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠান বৈরি আবহাওয়ার কারণে ফ্লাইট বাতিলের কথা জানায়। কিন্তু কবে নতুন ফ্লাইট দেবে, যাত্রীদের কিভাবে পাঠাব বা তারা কোথায় থাকবে, কোথায় খাবে সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। এতে আমাদের এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়াগামী ৩০ শ্রমিক ও তাদের পরিবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
তিনি বলেন, ওই এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে শ্রমিকদের পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী ৩১ মে তারিখের আগে তারা মালয়েশিয়ায় পৌঁছাতে না পারলে, সে দেশের সরকার ও চাকরিদাতা কোম্পানি তাদের গ্রহণ করবে না। যে করেই হোক তাদের ৩১ তারিখের আগেই পাঠাতে হবে।
ফ্লাইটের নতুন সূচি না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা কোথায় থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল রাতে এয়ারলাইন্স কোম্পানি থেকে শ্রমিকদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া আমরাও তাদের জন্য কিছু টাকা পাঠিয়েছি। আজও আমরা তাদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। এয়ারলাইন্স কোম্পানি থেকে শ্রমিকদের বাড়ি ফিরে যেতে বলছে। কিন্তু তারা একেকজন একেক জেলা থেকে এসেছেন। এখন আবার বাড়ি গিয়ে দুই তিনদিনের মধ্যে ফিরে আসা কষ্টকর ও ব্যয় সাপেক্ষ। তাই এই দুইদিন বিমানবন্দরের মধ্যেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৪
এসসি/এসআইএ