চাঁদপুর: ঘুষ ছাড়া কাজ করেন না চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর আলম - এমন অভিযোগ সেবা নিতে আসা লোকজনের।
শুধু তাই নয়, তিনি ঘুষ নিয়েও সঠিক সময়ে কাজ না করে হয়রানি করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে ওই ইউনিয়নে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হয়। সেবাগ্রহীতার অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত কর্মকর্তার সঙ্গে।
এ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ব্যক্তি হলেন, ওই ইউনিয়নের খেরুদিয়া গ্রামের আবদুর রহমান বকাউলের স্ত্রী আমেনা বেগম লাকী। তিনি সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন অভিযোগ করে গত ২৪ জুন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে আমেনা বেগম উল্লেখ করেন, তার স্বামীর নামীয় ৯ শতাংশ জমির খাজনা দাখিল অনলাইন করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। কিন্তু ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আলমগীর আলম তাকে কাজটি করে না দিয়ে টালবাহানা করেন। তিনি এই কাজের জন্য ওই কর্মকর্তাকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিলেও সেবা পাননি। পরবর্তীতে গেলে আলমগীর আলম ও তার অফিসের ঝাড়ুদার তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এসব কারণে তিনি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেন।
আমেনা বেগম বলেন, এই কর্মকর্তার কাছে সেবার জন্য গেলে সবাইকে তিনি হয়রানি করেন। ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর প্রকাশ্যে বলেন, ‘সরকার যে কয় টাকা বেতন দেয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। টাকা না দিলে আমি কোনো কাজ করবো না। ’
আমেনা বলেন, আমি একজন ভুক্তভোগী এবং যারা ওই কর্মকর্তার কাছে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন সবার দাবি তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সত্যতা যাচাই করছে। অভিযোগের আলোকে আমি ও আমেনা বেগম লাকী বক্তব্য দিয়েছি। আপাতত এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।
তিনি আরও বলেন, সেবা নিতে আসা আমেনা বেগম লাকী যেসব অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। উনি যখন আমার কাছে সেবা নিতে এসেছেন আমরা তখন অফিসের নিজস্ব কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আর ওনার কাগজপত্র ও মোবাইল নম্বর নিয়ে সমস্যা ছিল। সেজন্য কাজটি করতে দেরি হয়েছে। তবে আমি উনার কাজ সম্পন্ন করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে আমলে নিয়ে উভয়পক্ষকে কার্যালয়ে ডেকে আনেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান। অভিযোগকারী আমেনা বেগম লাকী ও অভিযুক্ত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর আলমের সঙ্গে সরাসরি নিজ দপ্তরে কথা বলেন।
তিনি বলেন, অভিযোগকারী বলেছেন, তাকে হয়রানি করা হয়েছে ও নাম জারির জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে। আর আলমগীর আলম তা অস্বীকার করেছেন। মূল সত্যটা বেরিয়ে না আসায় এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি তাদের বক্তব্যের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাব। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৪
এসএস/এসএএইচ