সিলেট: কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সহিংসতার ঘটনায় সিলেটে মেট্টোপলিটন এলাকার তিনটি থানায় ১০ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ২৪৪ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত ১৬ হাজার ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলায় ১৩৫ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নয়টি মামলার বাদী পুলিশ ও একটি মামলায় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা বাদী হয়েছেন।
দায়েরকৃত মামলাগুলোর মধ্যে কোতোয়ালি থানায় হত্যা, ভাঙচুর করে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ঘটনায় পাঁচটি, জালালাবাদ থানায় দায়েরকৃত চারটির তিনটিতে পুলিশ বাদী ও একটিতে বিদ্যুৎ কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
বুধবার (২৪ জুলাই) মহানগর পুলিশ সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যাসহ পাঁচটি মামলা, জালালাবাদ থানায় চারটি এবং দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানায় গত ১৭ ও ১৮ জুলাই পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় (নম্বর ২৮(১৭(৭)’২৪) ও (নং-২৯(৭)’২৪) এজাহারে ১৭ জন ও অজ্ঞাত ২০০/২৫০ জন করে আসামি করা হয়েছে। ২০ জুলাই কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে তিনটি। এর মধ্যে হত্যা ও বিস্ফোরক বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার (নম্বর-৩২ (২০(৪)২৪) এজাহারে ৩৯ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ২৫০০/৩০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত মামলার (নম্বর-৩৩(২০(৭)২৪) এজাহারে ৪০ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৫০০/৩০০০জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া কোতোয়ালি থানায় দায়েরকৃত মামলায় (নম্বর-৩৪(২০(৭)‘২৪) এজাহার নামীয় ৪০ জন এবং অজ্ঞাত ২৫০০/৩০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন শিপন বলেন, পাঁচটি মামলার মধ্যে একটি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও অ্যাসল্ট, পোস্ট অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় একটি, কোর্ট পয়েন্টে ভাঙচুরের ঘটনায় একটি, বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মহানগরীর জালালাবাদ থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) মাসুদ রানা বলেন, গত ২০ জুলাই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, অ্যাসল্টের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা দায়ের করেছে। এছাড়া দুস্কৃতকারীরা বিদ্যুৎ অফিসে অনুপ্রবেশ করে সিকিউরিটি পোস্ট ভাঙচুর করে সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া কুমারগাঁও ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক নিরাপত্তা মো. বোরহান বাদী হয়ে মামলা (নম্বর-১৭(৭)’২৪) দায়ের করেন। এই মামলায় অজ্ঞাত ১০/১৫ জনকে আসামি করা হয়।
নগরের দক্ষিণ সুরমা থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, পুলিশ আক্রান্তের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় সাতজনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চার/পাঁচশ’ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এছাড়া জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট থানায় আরও দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ দুই মামলাসহ মোট ১২টি মামলায় ১৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর বুধবার রাতে এটিএম তোরাব হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাই আবুল আহসান মো. আজরফ হোসেন বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলেও সেটি জিডি (নং-২০৪৭) হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দায়েরকৃত এসব মামলায় ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত জামায়াত-শিবির, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৬ সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০২ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
এনইউ/আরএ