ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৮ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

কবুতর চুরির অপবাদে শিশুকে ‘৩ ঘণ্টা’ বেঁধে নির্যাতন!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
কবুতর চুরির অপবাদে শিশুকে ‘৩ ঘণ্টা’ বেঁধে নির্যাতন!

পিরোজপুর: পিরোজপুরের নাজিরপুরে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে মো. সিয়াম ফকির (১১) নামে এক শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আটকরা হলেন- উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাঠি গ্রামের মৃত মন্নান মল্লিকের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫) ও তার মেয়ে লাবনী আক্তার (২৬)।

ভুক্তভোগী সিয়ামের ফুফু কুরছিয়া বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খবর আসে, সিয়ামকে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে সুপারি গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করছেন ফিরোজা ও মেয়ে লাবনী। তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, সিয়ামকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা মারধর করছেন অভিযুক্ত ওই মা-মেয়ে। এ সময় আমার উপস্থিতি দেখে তারা আমাকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন।

স্থানীয় পার্শ্ববর্তী উত্তর জয়পুর গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল বেপারী বলেন, সকালে শিশুর চিৎকার ও কান্না শুনতে পেয়ে ওই বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, সিয়ামকে একটি সুপারি গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটানো হচ্ছে। এ সময় সেখানে আমাকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ফিরোজা বেগম। কোনো শিশুকে এভাবে নির্যাতন অন্যায় জানালে আমাকেও মারধর করতে তেড়ে আসেন তিনি। পরে পুলিশের সহায়তা নিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী সিয়াম জানায়, তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে মা-মেয়ে মিলে সুপারির গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন। সে কবুতর চুরি করেনি বললেও তাকে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে থেমে থেমে মারধর করা হয়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আটক ওই দুই নারী জানান, সিয়াম তাদের ২০টি কবুতর চুরি করেছে। তাকে কোনো মারধর করা হয়নি। শুধু বেঁধে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন হাওলাদার বলেন, সিয়ামের বাবার সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক না থাকায় সে তার দাদির কাছে থাকে। বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত ওই মা-মেয়ে সিয়ামকে তার দাদির কাছ থেকে ধরে টেনে-হিঁচড়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এ সময় শিশুটির দাদি বাঁধা দিলে তাকে ঠেলে কাদা মাটিতে ফেলে দেন তারা।

নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জিনাত তাসনিম বলেন, ভুক্তভোগী শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার চিকিৎসাসেবা চলছে। অবস্থার বেগতিক মনে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কোথাও পাঠানো হবে।

নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল সিয়ামকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মা-মেয়েকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী সিয়ামের মামা অহিদুল শেখ বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।