ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সহিংসতায় রাজধানীর মিরপুরের ১০ নম্বর ও কাজীপাড়ায় মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রদলের নেতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) সাইবার ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ।
ডিবি জানায়, পরিকল্পিতভাবে মিরপুরে মেট্রোরেলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
একই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বজলুল রহমান (বিজয়) ও ছাত্রদলের জাতীয় বিশ্ববিদ্যাল সহ-সভাপতি মো. ফেরদৌস (রুবেল)।
রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। বিশেষ করে আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেলে আগুন লাগিয়েছে, সেতু ভবনে আগুন লাগিয়েছে। পুলিশ সদস্যদের ওপর যারা হামলা করেছে ও হত্যা করেছে, তারা যেখানেই থাকুক না কেন একে একে সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ হত্যার ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের স্বপ্নের মেট্রোরেল আজ বন্ধ। আপনারা জানেন গত ১৯ জুলাই কোটা আন্দলোনকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা মিরপুরের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে অগ্নিসংযোগ করেছে। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছি।
তিনি বলেন, মেট্রোস্টেশনে হামলার মাস্টারমাইন্ড ও নেতৃত্বদাতা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আবু হান্নান। হান্নান তার সহযোগীদের নিয়ে বিএনপি নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইফুল ইসলাম নিরবের নির্দেশনায় মেট্রোস্টেশনে আগুন দেয়। এ ঘটনায় আরও দুজন নেতার নাম প্রকাশ করেছে। যাদের মধ্যে বিএনপি নেতা শ্রাবণ আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিএনপির নেতারা চার-পাঁচজনকে দায়িত্ব দেন। মেট্রোস্টেশনে আগুন দিয়ে ধ্বংস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষ যেন মেট্রোতে আর চলাচল করতে না পারে।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, মেট্রোস্টেশনে আগুন ও দায়িত্বরত পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে ডিবি অভিযান চালাচ্ছে।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন গাজীপুরের সাবেক মেয়রের সহকারীকে মেরে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে। একজন পথচারীকে পুলিশ ভেবে মেরে দেড় কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এমন বর্বোরোচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। জড়িতরা বাংলাদেশের উন্নয়নের পক্ষের কোনো লোক না। তারা দেশকে অকার্যকর করতে অপচেষ্টা চালিয়েছে। অনেকে মনে করছে ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে বেঁচে যাবেন। সেটা হবে না। মামলা হয়েছে। ডিবি তদন্ত করছে। আমরা জড়িত কাউকে ছাড় দেব না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনকে ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। এই আন্দোলনকে ঘিরে তারা রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করা হয়। এ সব কিছুই পরিকল্পিত। এই ঘটনায় ইন্ধনদাতা, অস্ত্রদাতাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
এসজেএ/এমজেএফ