ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চাঁদপুরেও আলিশান বাড়ি সাবেক সচিব শাহ কামালের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৪
চাঁদপুরেও আলিশান বাড়ি সাবেক সচিব শাহ কামালের

চাঁদপুর: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দুটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার হওয়া সাবেক সচিব শাহ কামালের নিজ জেলা চাঁদপুরেও রয়েছে একটি পাঁচতলা আলিশান বাড়ি ও সম্পত্তি রয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর প্রায় সময় এখানে এসে থাকতেন।

সর্বশেষ গত চারদিন আগে রাতে গাড়ি নিয়ে এসে পুনরায় ঢাকায় চলে যান। তার বাড়িটিতে এখন দেখাশোনার জন্য একটি দরিদ্র পরিবার রয়েছে।

শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে চাঁদপুর শহরের বন বিভাগ সড়কের খলিশাডুলি গ্রামে ১০ ইউনিটের পাঁচতলা ভবনের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই বাড়িসহ তার সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৪০ শতাংশ। বাড়িটি পৌরসভার মধ্যে হলেও পুরো বাড়ির কোথায় পাওয়া যায়নি হোল্ডিং নম্বর। কৌশল করে তিনি হোল্ডিং নম্বর বসাননি। বাড়ির সামনেও নাম ফলক নেই।  

শাহ কামালের বাড়ির উত্তরে আছে মো. নরুজ্জামান নামে ব্যক্তির খান বাড়ি। দক্ষিণে মো. আবুল বারী মিঞা ও শাহিনা আক্তারের বাড়ি। ওই বাড়ির পৌরসভার হোল্ডিং নম্বর হচ্ছে ৯৯৭/৫। পূর্ব দিকে চাঁদপুর বন বিভাগের কার্যালয়।

খলিশাডুলি গ্রামের বাসিন্দা মজিদ পাটওয়ারী। তার পিতা ও আত্মীয়দের কাছ থেকে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন শাহ কামাল পরিবার। মজিদ পাটওয়ারী বলেন, গত প্রায় ২০ বছর পূর্বে এই সম্পত্তি ক্রয় করেছেন শাহকামাল ও তার ভাই মাজহারুল আলমের নামে। তবে সর্বশেষ তিনি এসব সম্পত্তি নিজের এবং স্ত্রীর নামে লিখে নিয়েছেন। কিছুদিন আগে পাশের একটি জমিও কিনেছেন তার স্ত্রী নামে। বাড়ি নির্মাণ করার সময় আমি তার বাড়িতে মাটি দিয়ে ভরাট করে দিয়েছি। ওই ভরাটের আড়াই লাখ টাকা বিল দিয়েছেন সাবেক মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ। সাবেক সচিবের কাছে আমি এখনও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা পাব।  

স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, তিনি গত চারদিন আগে রাত ১০টার দিকে বাড়িতে আসেন। আমি তার কালো রঙের গাড়ি থামিয়ে চা খাওয়ার জন্য বলি। পরে আসবেন বলে ঢাকায় চলে যান। তার এই বাড়িটি নির্মাণ কাজ ও সবকিছু সামলাতেন মিজানুর রহমান নামে ঠিকাদার।  

খলিশাডুলি গ্রামের জিতু পাটওয়ারীর ছেলে জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী বলেন, তিনি খুবই প্রভাব দেখাতেন এলাকায় এলে। পৌরসভার সাবেক মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সখ্যতা থাকার কারণে সড়কটিও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকা করেছেন। তার পাঁচতলা ভবনটি ২০১৬ সালে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর নিকট ভাড়া দেন। সমিতি তাকে প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা ভাড়া পরিশোধ করতেন। ওই অফিস চলে যাওয়ার পরে এখন বাড়িটি খালি পড়ে আছে।

সচিব শাহ কামালের বাবার নাম মো. মোজাহেরুল হক। গ্রামের বাড়ি জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা দ্বাদশ ইউনিয়নের কাপাইকাপ গ্রামে। আট ভাই-বোনের মধ্যে কামাল তৃতীয়। গ্রামের বাড়িতে থাকেন তার বড় ভাই ডা. শাহজাহান। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি। বক্তব্যের জন্য তার মোবাইল নম্বরে একাধিক ফোন দেওয়া হয়। তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে বক্তব্যের জন্য সাবেক সচিব মো. শাহ কামালের ব্যক্তিগত তিনটি নম্বরে কল দেওয়া হয়। তিনটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।