ঢাকা, রবিবার, ৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

রিমান্ডে নির্যাতন না করতে পুলিশের নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত চাইলেন শিক্ষার্থীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৪
রিমান্ডে নির্যাতন না করতে পুলিশের নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত চাইলেন শিক্ষার্থীরা

সাতক্ষীরা: রিমান্ডের নামে নির্যাতন না করতে পুলিশের নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত চেয়েছেন সাতক্ষীরার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারের পর ছাত্র-জনতার যেসব মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে, সেসবও ফেরত চেয়েছেন তারা।

অন্যথায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় আইনি সহায়তা দেওয়া আইনজীবীরা।

রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে সাতক্ষীরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন আইনজীবী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

এসময় অ্যাডভোকেট শহীদ হাসান বলেন, তারা ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রদের মামলায় বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দিয়েছেন। বিবেক আর মানবতার কল্যাণে তারা এ কাজ করেছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় রিমান্ডের নামে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন সদর থানার তৎকালীন ওসি মহিদুল ইসলাম, তদন্তকারী কর্মকর্তা মোল্যা মো. সেলিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। অনতিবিলম্বে টাকা ফেরত না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাতক্ষীরার অন্যতম সমন্বয়ক ইমরান হোসেন জানান, তাদের বিরুদ্ধে হওয়া দুটি মামলা এখনো চলছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী অনতিবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, অন্যতম সমন্বয়ক ইমরান হোসেনের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা, শাহারুজ্জামানের কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা, কাজী সাকিবের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা, ইব্রাহিম হোসেনের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা ঘুষ নেন পুলিশ পরিদর্শক মোল্যা মো. সেলিম।

মঈনুল ইসলামের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা নেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক বিন আব্দুল আজিজ।

এসএম রোকনুজ্জামানের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন সদর থানার ওসি মহিদুল ইসলাম।  

এভাবেই পুলিশ কর্মকর্তারা রিমান্ডে থাকা শিক্ষার্থীদের নির্যাতন থেকে রেহাই দেওয়ার অযুহাতে তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নেন।

এছাড়া পুলিশ শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত কমপক্ষে ১০টি অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেড়ে নেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে সদর থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ। একটি মামলায় আসামি করা হয় ১৮ জনকে ও আরেকটি মামলায় আসামি করা হয় ১৩ জনকে। প্রথম মামলায় ১৩ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) মোল্যা মো. সেলিম।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।