ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মৌলভীবাজারে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ৩৭ ইউনিয়ন, দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
মৌলভীবাজারে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ৩৭ ইউনিয়ন, দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে সড়কে পানি। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: টানা তিনদিনের আকস্মিক ভয়াবহ বিপর্যস্ত গোটা মৌলভীবাজার। ভারতের উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে ইতোমধ্যে জেলার মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুরের দিকে সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর,  কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ উপজেলাসহ ৪ টি উপজেলায় মনু নদ ও ধলাই নদীর সর্বমোট ১৩টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে গেছে।

এর মধ্যে মনু নদীর ৮টি পয়েন্ট ও ধলাই নদীর মোট ৫টি পয়েন্টে পানির তীব্র স্রোতে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। মৌলভীবাজার সদর উপজেলা থেকে রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় যাবার সড়ক পথে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে পাকা সড়কে পানি উঠে গেছে।  

পাউবোর তথ্য বলছে সর্বশেষ মনু নদের পানি চাঁদনীঘাট ব্রিজ এলাকায় বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

তবে চাঁদনীঘাট ব্রিজ এলাকার লেভেল অনুযায়ী এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ১৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় প্রতি মুহূর্তে বেড়ে চলেছে স্রোতের তীব্রতা। শহরের উপকণ্ঠের শাহবন্দর এলাকায় মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধটিও রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।  

বৃহস্পতিবার রাতে মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের রাজনগর উপজেলার কদমহাটা এলাকায় মনু নদের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে ওই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেখানকার সাধারণ মানুষ। বানের পানিতে ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কটিও। পানি প্রবেশ করায় তলিয়ে গেছে রাজনগরের সরকারি খাদ্য গুদামসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন (পাউবো) বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল জানান, মনু নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে ভারতে এই মুহূর্তে বৃষ্টি বন্ধ থাকায় মন নদীর রেলওয়ে ব্রিজ এলাকা দিয়ে কমতে শুরু করেছে পানি।

ওদিকে, জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী জেলার মোট ৩৭টি ইউনিয়নের ২১২টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে খোলা হয়েছে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম।

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুস সালাম চৌধুরী জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে বন্যা আক্রান্ত এলাকায় রেড ক্রিসেন্ট, আনসার ভিডিপির সদস্যসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার অভিযানসহ বন্যাদুর্গত মানুষদের উদ্দেশ্যে ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৪
বিবিবি/এসএএইচ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।