ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মন্দির কমিটির পর এবার টোলে আদায় হওয়া অর্থ বন্যার্তদের সহায়তায় ঘোষণা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৪
মন্দির কমিটির পর এবার টোলে আদায় হওয়া অর্থ বন্যার্তদের সহায়তায় ঘোষণা ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল: বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর টোলে আদায় হওয়া অর্থ দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যার্তদের সহায়তায় দান করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে এমখান গ্রুপ।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যে পরিমাণ টাকা আসবে তার পুরোটাই সহায়তার ফান্ডে দেওয়া হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টোল প্লাজার ইনচার্জ আবুল হাসান খান সুমন।

তিনি বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান মাহফুজ খান স্যার আজকে টোলে আদায় হওয়া পুরো টাকা বন্যার্তদের সহায়তার ফান্ডে দেওয়ার জন্য বলেছেন। অন্যান্য দিনের ওপর নির্ভর করে ধারণা করা যায় আজকে দুই লাখ টাকার মত আদায় হবে।

সুমন বলেন, বন্যা আমাদের জাতীয় দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য মানুষ বিপদগ্রস্ত। এদের জন্য যার যার অবস্থান থেকে সহায়তা করা সকলের কর্তব্য।

এদিকে বন্যার্তদের সহায়তায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সহায়তার তহবিল সংগ্রহ করছে। জানা গেছে, টোলে আদায় হওয়া অর্থ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা ফান্ডের মাধ্যমে বন্যার্তদের কাছে পৌঁছানো হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে বন্যার্তদের সহায়তায় দুর্গোৎসবের বাজেট কমিয়ে বরিশালের বেশ কয়েকটি মন্দির কমিটি প্রথম অর্থ সহায়তা পাঠায়।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসব আয়োজনের বাজেট থেকে বন্যা দুর্গতদের অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে বরিশালের বেশ কয়েকটি মন্দির কমিটি। আরো কয়েকটি মন্দির কমিটি সহায়তা পাঠাতে তহবিল প্রস্তুত করেছে বলে জানা গেছে।

বরিশালের সবচেয়ে বড় মন্দির শ্রী শ্রী শংকর মঠ এর পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকাশ দাস জানান, ফেনী, কুমিল্লাসহ ১০টি জেলায় বন্যায় মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। আমাদের শংকর মঠের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসবের জন্য যে বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছিল তার বড় একটি অংশ বন্যা দুর্গতদের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখানে আমাদের মন্দিরের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যের একটি স্বেচ্ছাসেবী টিমও পাঠানো হয়েছে। আরো কয়েকটি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকার বেশি পাঠিয়েছি। আমরা আরো কিছু কমিটির সাথে যোগাযোগ করেছি এবং সকলের প্রতি আহ্বান রেখেছি দুর্গত এলাকার মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য।

আকাশ বলেন, এটি আমাদের মাতৃভূমি। এখানে কারো বিপদে পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাদের বিপদে আমরা যতটুকু পেরেছি তা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা কখনো বিপদে পড়লে হয়ত তারাও এগিয়ে আসবে। এভাবেই আমাদের সম্প্রীতি অটুট থাকবে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণারঞ্জন চক্রবর্তীর স্মৃতি দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অয়ন চক্রবর্তী বলেন, আমি অর্থ প্রদানকে সহায়তা বলছি না—আমাদের প্রতি দুর্গত এলাকার মানুষের অধিকার। দুর্গা পূজায় আলোকসজ্জা, ভালো পোশাক ক্রয়, সাউন্ড সিস্টেমের পেছনে অর্থ ব্যয় বাধ্যতামূলক নয়। ধর্মীয় যে রীতি রয়েছে সেটি পালন করাই যথেষ্ট। এজন্য আমাদের মন্দিরের পক্ষ থেকে ঐচ্ছিক ব্যয় করার জন্য যা বাজেট ছিল তা বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পাঠিয়েছি।

তিনি বলেন, পূজা উদযাপনে মূল যে বাজেট ধরা হয়েছিল তার অর্ধেকটা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আরো তহবিল সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি বন্যাক্রান্ত এলাকায় সহায়তার জন্য পাঠাতে।

এদিকে বরিশাল মহানগর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে জানিয়েছে, বড় বড় সবগুলো মন্দিরের পক্ষ থেকেই তহবিল সংগ্রহ করা হচ্ছে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের সহায়তার জন্য। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে এই সহায়তা পাঠাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৪
এমএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।