ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮০ জনের নামে পৃথক তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) ঢাকার আদালতে এসব মামলা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর বনশ্রীতে মুদি দোকানি মিজানুর রহমানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের বাবা কামাল হোসেন।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জুনায়েদ আহমেদ পলক, শেখ ফজলে নূর তাপস, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, আমির হোসেন আমু, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, বিজিপির মহাপরিচালক, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাবিবুর রহমান, র্যাবের মহাপরিচালক, সৈয়দ নুরুল ইসলাম, হারুন-অর-রশিদ, বিপ্লব কুমার সরকার, সাদ্দাম হোসেন, ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, খিলগাঁও থানাধীন বনশ্রী এলাকায় ১৯ জুলাই এলাকায় পায়ে গুলি লেগে গুলিবিদ্ধ হন মিজানুর রহমান। পরে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে মারা যান তিনি।
একই আদালতে বছরের কিশোর আশিকুল ইসলাম গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে আরেকটা হত্যা মামলা করেছেন নিহতের মা আরিশা আফরোজ। আদালত এই মামলাকেও এফআইআর হিসেবে গ্রহণের জন্য খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দেন।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব বিশ্বাস।
১৯ জুলাই খিলগাঁও থানাধীন বনশ্রী এলাকায় পুলিশের গুলিতে মারা যান আশিক।
এদিকে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন সজলকে গুলি করে হত্যা এবং তৎপরবর্তীতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে লাশ গুমের চেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, হারুন অর রশীদ, বিপ্লব কুমার, হাবিবুর রহমান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের ডাকে এক দফা দাবিতে আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানাধীন বাইপাইলে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল করছিলেন। সেই আন্দোলন দমনের জন্য পুলিশ নির্বিচারে তাদের ওপর গুলি চালায়।
ওই সময় সিটি ইউনিভার্সিটির বিএসসি (টেক্সটাইল) দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র মো. সাজ্জাদ হোসেন সজলকে (১৯) আটক করে থানায় নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের পর পুলিশ গুলি করে মেরে ফেলে। পরে তার মরদেহ ধ্বংস/গুম/নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে আরও অজ্ঞাতপরিচয় ৭/৮ জন আশুলিয়া থানার সামনে রাস্তার ওপর রাখা পুলিশের ব্যবহৃত লেগুনায় থাকা সজলের মরদেহসহ অন্য ছাত্রদের মরদেহ পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৪
কেআই/এএটি