ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দেড় মাসেও নামেনি বন্যার পানি, দুর্ভোগে লক্ষ্মীপুরের লক্ষাধিক মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪
দেড় মাসেও নামেনি বন্যার পানি, দুর্ভোগে লক্ষ্মীপুরের লক্ষাধিক মানুষ

লক্ষ্মীপুর: প্রায় দেড় মাস আগে লক্ষ্মীপুরে বন্যা হয়েছে। এক মাসের মাথায় বেশিরভাগ এলাকার পানি নেমে গেলেও কিছু কিছু এলাকার পানি এখনো নামেনি।

নানা প্রতিবন্ধকতা এবং খালে পানি প্রবাহের গতি কম থাকায় পানি নামতে পারছে না।

এছাড়া প্রতিনিয়ত টানা ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পানির উচ্চতা বাড়ছে। আবার কোনো কোনো এলাকার পানি নেমে গেলেও বৃষ্টির কারণে আবার জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

জেলার তিন উপজেলা সদর, কমলনগর ও রামগতির প্রায় লক্ষাধিক বাসিন্দা এখনো পানিবন্দি অবস্থায় আছেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ভাঙ্গাখাঁ এবং দত্তপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এ দুই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো বাড়ির উঠান, রাস্তাঘাট, বাগান এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। বিশেষ করে জকসিন-পোদ্দারবাজার সড়কের পাশে থাকা রহমতখালী খালের সংযোগ খালের পূর্ব পাড়ের বাড়িগুলোতে পানি রয়েছে।  

দীর্ঘ দেড় মাস ধরে পানিবন্দি থাকায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

সদর উপজেলার ভাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন, খালপাড়ে আমাদের ঘর। বন্যার শুরুতে প্রায় দেড় মাস আগে আমাদের ঘরে পানি উঠেছে। বাড়ির উঠানে কোমর পানি, ঘরে হাঁটু পানি ছিল। স্ত্রী এবং মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। এখন ঘরে পানি না থাকলেও উঠানে পানি আছে। বৃষ্টির কারণে পানি শুধু বাড়তে থাকে।

তিনি বলেন, খালে পানি প্রবাহের গতি নেই। গাছপালা এবং কচুরিপানার কারণে পানি নামছে না৷ দীর্ঘ সময় বন্যার কারণে খুবই কষ্টে আছি। বলে বোঝাতে পারবো না।

একই এলাকার মিরিকপুর বাজারের বাসিন্দা বকুল মিয়া বলেন, খালপাড়ের বাড়িগুলো এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। দেড় মাস ধরে এ অবস্থা। এসব এলাকায় পানি উঠেছে আগে, কিন্তু নামবে সব এলাকার শেষে।

দত্তপাড়া ইউনিয়নের গঙ্গাশিবপুর গ্রামের বাসিন্দা মিরাজ হোসেন বলেন, উত্তর বড়ালিয়া ও গঙ্গাশিবপুর গ্রাম এবং এ ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি।

কমলনগর উপজেলা চরকাদিরা ইউনিয়নের বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান বলেন, ভূলুয়া নদীর দুই পাড়ে কমলনগরের চরকাদিরা ও রামগতির চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের বাসিন্দারা এখনো পানিবন্দি।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজিব কুমার সরকার বলেন, জলাবদ্ধতার বড় কারণ হচ্ছে, এখানে পানির অবাধ প্রবাহ ছিল না। বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েও অনেকে খালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৩টি স্থানে রহমতখালী খাল পরিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া একযোগে রামগতি, রায়পুর ও রামগঞ্জ পৌরসভাতেও খাল পরিষ্কার অভিযান চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।