ফেসবুকে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে হলের ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলে রাতভর নির্যাতন করা হয় আবরার ফাহাদকে।
আজ ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রাণপ্রিয় ভাইকে হারানোর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ।
বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তিনি।
রোববার (৬ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে আবরার ফাইয়াজ লেখেন, ‘২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভাইয়া ঢাকাতে যায়। ২৬ সেপ্টেম্বরে কুষ্টিয়াতে আসার পরেই ইলিশ আর ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে দুটি পোস্ট দিয়েছিল। সেদিন আম্মু নিজে ভাইয়াকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসছিল। এরপর মাত্র ১৩-১৪ ঘণ্টার মধ্যে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। আর ২০ ঘণ্টা পরই বাসায় আসে মৃত্যুর সংবাদ।
সেদিন সকালে যাওয়ার আগে ৯টার দিকে আম্মু আমাকে ডেকেছিল। ভাইয়া চলে যাচ্ছে, ওঠ। কিন্তু ভাইয়া বলে, ‘না থাক, অনেক রাতে ঘুমাইছে ঘুমাতে দাও। আমি চলে গেলাম। তুই বেশিদিন থাকিস না তাড়াতাড়ি ঢাকা চলে আসিস। যাওয়ার আগের রাতে আম্মুকে ভাইয়া বলেছিলো, ‘আম্মু অনেক ছারপোকা কামড়ায়। পিঠে একটু হাত বুলিয়ে দেও তো। কোনো দাগ হয়ে গেছে নাকি? আচ্ছা তোমার কাছে কী এমন কোনো ওষুধ আছে যা লাগালে আর কামড়াবে না আমাকে?’
প্রসঙ্গত, আবরার ফাহাদ ছিলেন বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। । পরে রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার সুরতহাল করে পুলিশ।
দেশব্যাপী আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর ফুঁসে ওঠেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
আবরার হত্যাকাণ্ডের মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২৪
এসএএইচ