ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নাতির মৃত্যুর খবর শুনে মারা গেলেন দাদি, একসঙ্গে জানাজা-দাফন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
নাতির মৃত্যুর খবর শুনে মারা গেলেন দাদি, একসঙ্গে জানাজা-দাফন  নিহত জুনায়েদ আল হাবিব ও তার দাদি রেহেনা খাতুন

নরসিংদী: নরসিংদীতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা স্বাধীন ও পিয়ালের নেতৃত্বে করা ছুরিকাঘাতে আহত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবি করা জুনায়েদ আল হাবিব। গত ২৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পরে হাসপাতালে ৯দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়।

 

তার মৃত্যুর খবরে বিচারের দাবিতে স্থানীয়রা মহাসড়ক অবরোধ করে। এদিকে আদরের নাতির মৃত্যুর খবর শুনেই হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তার দাদি রেহেনা খাতুন (৮০)।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৩টায় নিজ বাড়ি নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের বটিয়ারায় তার মৃত্যু হয়।  

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নিহতের ছেলে জসিম উদ্দিন। রেহেনা ওই এলাকার মৃত আব্দুল আহাবের স্ত্রী।

নিহতের পরিবার জানায়, ২৮ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে জুনায়েদ আল হাবিবকে ছুরিকাঘাত করে স্থানীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা স্বাধীন ও পিয়ালের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী। টানা ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি গ্রিন লাইফ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। জুনায়েদ ছিলেন পরিবারে একমাত্র সন্তান। নাতির অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারেননি দাদি রেহেনা খাতুন। রাতে খবরটি শোনার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মঙ্গলবার রাতে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়। বুধবার  সকালে উপজেলার বটিয়ারা এলাকায় নিহত জুনায়েদ ও তার দাদি রেহানা খাতুনের জানাজা একসাথে অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

নিহত জুনায়েদের বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, আমার একটিমাত্র সন্তান ছিল। আন্দোলনে যাওয়ার কারণে তাকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সন্তান হত্যার বিচার চাই।

নিহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা জুনায়েদের স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বিএনপি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, স্বৈরাচার হাসিনাকে হটাতে আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা ছিল জুনায়েদের। তাই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। জুনায়েদের মৃত্যুর শোকে তার দাদিও মারা গেছেন। আমরা তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। সেই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।  

রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল জব্বার জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িত স্বাধীন, পিয়ালসহ ১৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহতের চাচা মো. শফিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০১১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।