ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিরাপত্তা জোরদার থাকলে ৭ খুনের ঘটনা হতো না: কর্মবিরতিতে থাকা নৌযান শ্রমিকরা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
নিরাপত্তা জোরদার থাকলে ৭ খুনের ঘটনা হতো না: কর্মবিরতিতে থাকা নৌযান শ্রমিকরা  মেঘনায় নোঙর অবস্থায় স্থির লাইটার জাহাজ। ছবি: বাংলনিউজ

চাঁদপুর: চাঁদপুর মেঘনায় জাহাজে সাত খুনের রহস্য উদ্ঘাটন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং জড়িতদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১২টার পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে নৌযান শ্রমিকেরা।

নৌপথে নিরাপত্তা জোরদার থাকলে সাত খুনের ঘটনা ঘটতো না বলে জানান তারা।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের হরিণা ফেরিঘাট, পুরানবাজার, বড় স্টেশন মোলহেড ও লঞ্চঘাট এলাকায় বহু পণ্যবাহী লাইটার জাহাজ নোঙর অবস্থায় দেখা গেছে।

শহরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরানবাজারে গতকাল রাত পর্যন্ত পণ্য ওঠানামা করলেও আজ সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। ওই এলাকার রনাগোয়াল এলাকায় বেশ কয়েকটি পণ্যবাহী জাহাজ নোঙর অবস্থায় আছে। ওইসব জাহাজের মাস্টার, চালক ও বেশ কয়েকজন সুকানি এবং খালাসি পাড়ে এসে অবস্থান নিয়েছেন।

এ সময় তারা জাহাজে ৭ খুনের বিচার ও বিভিন্ন দাবিসহ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত নৌ পথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

কর্মবিরতিতে পণ্যবাহী নৌযানের মাস্টার, চালক, সুকানি ও খালাসিরা

কর্মবিরতি থাকা এমভি এনডিই-১০ জাহাজের মাস্টার রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি প্রায় একযুগ জাহাজে চাকরি করছি। এই ধরনের ঘটনা কখনো দেখিনি। এই ঘটনায় সাতজন মায়ের বুক খালি হয়েছে। এটি নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও ঘটেছে। তবে তখন হয়ত দুই একজন খুন হয়েছে। এই রুটে চলাচল করে দেখেছি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ, চাঁদপুরের হাইমচর, মাঝের চর এলাকা ডাকাতের অভয়ারণ্য। এসব এলাকায় সব সময় ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের মালিকানাধীন এমভি এনডিই-৯ জাহাজের চালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আজ ভোরে আমরা চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরে এসে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে আমরা কর্মবিরতিতে আছি। আমরা এই সাত খুনের বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও নৌ পথের নিরাপত্তা দাবি করছি।

একই কোম্পানির এমভি এনডিই-১০ জাহাজের প্রধান চালক বাবুল মিয়া বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলমান থাকবে। আমাদের সকল আন্দোলনের সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি থাকে। কিন্তু বিগত কোনো সরকার আমাদের দাবির প্রতি গুরুত্ব দেয়নি। নৌ পথের নিরাপত্তা জোরদার থাকলে এমন খুনের ঘটনা ঘটতো না। আমরা জেনেছি ৭ খুনের ঘটনার দিন নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে কয়েকবার ডাকা হয়েছে। তারা কোনো উত্তর দেয়নি। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।

নৌ যান শ্রমিক ফেডারেশন চাঁদপুর জেলা কমিটির সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত আছে। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলার জন্য ডাকা হয়নি।

কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লেফট্যানেন্ট ফজলুল হক বলেন, চাঁদপুর নৌ সীমানায় আমাদের নিয়মিত টহল আছে। আগের চাইতে এখন টহল আরো জোরদার করা হয়েছে।

নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, নৌযান শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে কর্মবিরতি করছে। এটি তাদের বিষয়। আমরা চাঁদপুর নৌ অঞ্চলে সার্বিক নিরাপত্তা অব্যাহত রেখেছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।