লক্ষ্মীপুর: অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, এক–এগারো নিয়ে মিছে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে বলব– আসুন, বাংলাদেশ পন্থার ভেতর দিয়ে আমরা যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি আছি, তারা ঐক্যবদ্ধ হই, সরকারকে সহযোগিতা করি সংস্কারগুলো করার জন্য।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপস্থিতদের উদ্দেশে মাহফুজ আলম বলেন, আপনাদের সদিচ্ছা থাকলে আপনারা এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। সংস্কার কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আমরা একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের দিকে এগোব।
সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের যারা এ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানবিরোধী, জনগণবিরোধী, আলেমবিরোধী, নারীবিরোধী- তাদের কাউকে আর এভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। আমাদের ম্যান্ডেট দিয়েছেন আপনারা (জনগণ)।
তিনি বলেন, আপনারা রাস্তায় নেমে ডাক দিয়েছেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা এনেছি, তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা ছাত্ররা তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। আমরা কোনো রকম পক্ষপাত করতে চাই না। কারো সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।
মাহফুজ আলম বলেন, বাংলাদেশের সেনাশাসন আসার কোনো প্রেক্ষিত নেই। আমরা কারো মদদে, কোন রাষ্ট্রের মদদে হাসিনাকে উৎখাত করিনি। আমরা ছাত্র–জনতা রক্ত দিয়ে হাসিনাকে উৎখাত করেছি। আমাদের কারো তাবেদারি করার আর দরকার নেই। হাসিনার তাবেদারি করার যে প্রক্রিয়া, সেটাকে নস্যাৎ করে দিয়ে নিজেদের রক্তের বিনিময়ে এ স্বাধীনতা এনেছি। আমরা কারো কাছে আর মাথানত করব না।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে একটি নতুন রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের মধ্যে ঐক্যের ঘাটতি রয়ে গেছে। আমরা এখনো বুঝতে পারিনি, আওয়ামী ফ্যাসিজম শুধুমাত্র রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে তারা নিঃশেষিত হয়ে যায়নি বরং দিল্লির কোলে আশ্রয় নিয়ে তারা ফোঁস ফোঁস করছে। তারা আবারও ছোবল মারার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের বলে দিতে চাই– এটা আমাদের প্রজন্মের লড়াই, আমাদের ছাত্র–জনতার লড়াই, এটা বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং সার্বভৌম হয়ে ওঠার লড়াই।
উপদেষ্টা বলেন, কোনোভাবে যদি আবার আওয়ামী লীগ দিল্লির কোলে আশ্রয় নিয়ে আমাদের দিকে আবারও চোখ রাঙাতে চায়– আমরা কি বসে থাকব? আমরা কিন্তু বসে থাকব না। আমাদের শহীদদের পথ অনুসরণ করে আমরা শাহাদাতের রাস্তা বেছে নেব। আমরা আবার লড়াই করব।
রামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দিদারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রামগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির নাজমুল হাসান পাটওয়ারী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সহ-সভাপতি জাকির হোসেন ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন রামগঞ্জ মডেল ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও চাঁদপুর গৃদকালন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আব্দুল বাতেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৫
আরএইচ