ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভোগান্তি নিয়ে ইজতেমায় মুসল্লিরা

মফিজুল সাদিক ও এ কে এম রিপন আনসারী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৫
ভোগান্তি নিয়ে ইজতেমায় মুসল্লিরা ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বিশ্ব ইজতেমা ময়দান থেকে: আমজাদ হোসেন (৫৫)। যশোর জেলার মনিরামপুর থানার শ্যামপুর গ্রাম থেকে বিশ্ব ইজতেমায় এসেছেন বুধবার রাতে।

প্রায় ২১ বছর যাবত টঙ্গীর তুরাগ তীরের তাবলিগ জামাতের ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। এবারের অভিজ্ঞতা একটু ভিন্ন। কারণ, এর আগে ইজতেমার আগ মুহূর্তে হরতাল-অবরোধ হয়েছে কিনা মনে পড়ে না তার।

এক ধরনের  ভোগান্তি সঙ্গী করে এবারের বিশ্ব ইজতেমায় এসেছেন তিনি।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমরা বাস গাড়ি ভাড়া করে এসেছি। আসতে অনেক ভয় ছিল। আস‍ার সময় মানিকগঞ্জে রাস্তায় গাছ ফেলানো ছিলো। এক ধরনের আতঙ্ক নিয়েই ইজতেমায় এসেছি এবার। কারণ এরা ইজতেমার গাড়িতেও ইট মারতে পারে, গাড়ি ভাঙচুর করতে পারে।

অনেকে দূর দূরান্ত থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে এসেছেন তুরাগ তীরে। বিশ্ব ইজতেমায় শামিল হতে পারলেও এখনও শঙ্কা কাজ করছে মুসল্লিদের মধ্যে। কারণ ফিরতি পথে যদি আগুন-ভাঙচুরের মধ্যে পড়তে হয়?

রফিকুল ইসলাম (৫০)। তিনিও যশোর মনিরামপুর থেকে এসেছেন। বর্তমানে তিনি মনিরামপুর নিহালপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। ভোগান্তি সঙ্গে করে ইজতেমায় শামিল হতে পারলেও বাড়ি ফিরে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাজ করছে এই মুসল্লির মনে।

রফিকুল বাংলানিউজকে বলেন, দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে। মারামারি কাটাকাটির মধ্যে পড়ে যেতে পারি। আমরা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি পৌঁছাতে পারি সেই দিকটা যেন সরকারি ও বিরোধীদল বিবেচনা করে। অন্তত ইজতেমার এই কয়টা দিন দেশের পরিস্থিতি ভালো থাক।

তবে হরতাল ও অবরোধের কারণে এবার কিছুটা হলেও মুসল্লি কম হয়েছে অন্য বছরের তুলনায়। অনেকে বাড়তি ভাড়া ও হরতাল আতঙ্কে আসেন নি। অনেকে গাড়ি ভাড়া করে ইজতেমায় আসেন। এর আগে একজনের নেতৃত্বে একটি তালিকা তৈরি করা হয়।

যশোর মনিরামপুরে রফিকুলের জিম্মাদারে প্রায় ৬০ জন আসার কথা থাকলে এসেছেন মাত্র ৪০ জন। এতে করে ৪০ জনের বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে এদের।

তিনি বলেন, ২০ জনের টাকা সাথীদের কাছ থেকে নিয়ে দিতে হবে। ২০ জন এলে আমরা আরো কম টাকায় আসতে পারতাম।

ভোলা লালমোহন থেকে তবলিগ জামাতের ১ম দফার বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, দেশে ভাঙচুর-আগুনের মধ্যেও লঞ্চে কষ্ট করে এসেছি। অনেকে আসেনি ভয়ে।

একই কথা বলছেন চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা মুসল্লি আনিস হাজি। তিনি বলেন, আল্লাহর উপরে তায়াক্কুল (বিশ্বাস) ছিল দীনের কাজে আসতে সমস্যা হবে না। তাই পথে কোনো সমস্যা হয়নি। সহি সালামতে এসেছি। তবে মনের মধ্যে একটু ভয় ছিল, কি জানি কি হয়। তবে আমাদের বাসের সামনে বিশ্ব ইজতেমা লেখা ব্যানার ছিল।

অনেক মুসল্লি বাস না পেয়ে ট্রেনে শত কিলোমিটার পথ দাঁড়িয়ে এসেছেন ইজতেমায় অংশ নিতে। রাজশাহী থেকে এসেছেন শহিদুল ইসলাম। তিনি
বাংলানিউজকে বলেন, ট্রেনে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সমস্ত পথ দাঁড়িয়ে এসেছি রোববার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেবো বলে। ট্রেনে এত মানুষ যে টিটি একবার টিকিট চেকও করতে পারেনি মানুষের ভিড়ে।

ভোগান্তি, শঙ্কা নয় দেশের সৃষ্ট পরিস্থিতির অবসান চান মুসল্লিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।