ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শুক্রবারের সরেজমিন

ভৈরবকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৫
ভৈরবকে পর্যটন নগরী  হিসেবে গড়ে তোলা হবে ছবি: জনি সাহা / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শুক্রবারের সরেজমিন, বাংলানিউজের নিয়মিত উদ্যোগ। প্রতি শুক্রবার বাংলানিউজের একটি টিম চলে যাচ্ছে কোনো বিশেষ ঘটনাস্থল বা সাইটে।

সেখানে ঘুরে কথা বলে, বিষয়ের গভীরে ঢুকে তুলে আনছে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলের রিপোর্ট ও ফিচার। থাকছে ছবি-ভিডিও। যা প্রকাশিত হচ্ছে পরবর্তী রোববারে। ‘শুক্রবারের সরেজমিন’র এবারের স্পট ছিলো ভৈরব বন্দর। বাংলানিউজ টিম গত শুক্রবার এই বন্দরকে ঘিরে কর্ম-চাঞ্চল্য দেখেছে। আশে পাশে শত রকমের পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে। যার মধ্য থেকে উঠে এসেছে ভৈরবের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার গল্প। এবারের টিমে ছিলেন স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইশতিয়াক হুসাইন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ইসমাইল হোসেন, ডেপুটি চিফ অব ফটো করেসপন্ডেন্টস কাশেম হারুন, নিউজরুম এডিটর জনি সাহা ও কবির হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শেখ জাহাঙ্গীর।

ভৈরব থেকে: দেশের অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে ভৈরবের সুখ্যাতি আছে। এর পাশাপাশি ভৈরবকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার।

উপজেলা পরিষদে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে জেসমিন আক্তার ভৈরব নিয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়েই একথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রাচীন বাণিজ্য নগরী ভৈরবের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে মেঘনা নদী। এই নদীর তীর হতে পারে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। নদীর তীরে দাঁড়ালে মনে হয় যেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে আছি। এজন্য কাজ করা হচ্ছে। এটি সম্পন্ন হলে ব্যবসার কেন্দ্রের সঙ্গে সঙ্গে ভৈরব হয়ে উঠবে পর্যটন নগরী।

গেল বছরের আগস্টে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়ে কাজের মাধ্যমে এরই মধ্যে এলাকাবাসীর কাছে প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন জেসমিন আক্তার। বিশেষ করে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোরতার কারণে।  

নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, সীমান্তের কাছে হওয়ায় এখানে প্রকাশ্যেই মাদক বিক্রি হয়। জড়িতদেন ধরা হলেও দু’দিন পরে আবার তারা জামিনে বেরিয়ে আসেন। তবে এরপরেও তিনি থেমে থাকবেন না বলে স্পষ্ট করে জানান।  

উপজেলাকে নিয়ে পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে জেসমিন আক্তার বলেন, ভৈরবে দেড়শ’ একর জায়গার ওপর ইপিজেড তৈরির প্রস্তাব তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।

উপজেলার জগন্নাথপুরে প্রতিষ্ঠিত হবে প্রস্তাবিত এ ইপিজেড। এখানকার সঙ্গে নৌ ও রেল যোগাযোগ দুটিই রয়েছে। এসব দিক বিবেচনাতে জগন্নাথপুরই সেরা জায়গা। এখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি দুই ধরনের শিল্প স্থাপন করা যাবে। এটি নির্মিত হলে ভৈরবের অর্থনীতি আরো সচল হবে বলে মনে করেন ২৪তম বিসিএসের এ কর্মকর্তা।

জেসমিন আক্তার বলেন, উপজেলার উন্নয়নে কালিকা প্রসাদ ইউনিয়নে বিসিক শিল্প নগরীর কাজও শুরু হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে হওয়ায় এখানকার যোগাযোগও হবে অনেক সহজ।

উপজেলার একমাত্র মাঠটিকেও আধুনিক স্টেডিয়াম তৈরির অংশ হিসেবে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এসব উন্নয়ন কাজ হলে এখানকার চেহারা অনেকটাই পাল্টে যাবে।

এসব বড় বড় প্রকল্পের পাশাপাশি শহরে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সড়ক বিভাজক, মৎস্য সংরক্ষণে আধুনিক কোল্ড স্টোরেজ তৈরির কাজও হাতে নিয়েছেন ইউএনও।  

নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, শহরের যানজট ও হকারদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে দুটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউএনও। যানজটমুক্ত শহর করতে বাসস্ট্যান্ডকে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে দখলমুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে কোনো বাস ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুর্জয় মোড়ে অযথা ভিড় করবে না। আগামী এক মাসের মধ্যে আন্ত:জেলা বাসগুলো মহাসড়কে না দাঁড়িয়ে নির্দিষ্ট কাউন্টারে চলে যাবে। হকারদের জন্য সপ্তাহের একদিন রাখা হবে হলিডে মার্কেট। ওইদিন তারা শহরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসবে। এতে মূল শহরের ওপর থেকে হকারদের উৎপাত কমে যাবে।       

সর্বোপরি ব্যবসায়ীদের জন্য এই এলাকাকে আরো বেশি নিরাপদ করাই তার সামনে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে অভিহিত করেন এই কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৫

** জ্যান্ত মাছ পেতে চান, ভৈরবে চলে যান
** কয়লার অভাবে ব্যবসা অঙ্গার!
** সব থেকেও কিছু না থাকার দুঃখ ভৈরবের
** ভালো নেই ভৈরবের পাদুকা শ্রমিকরা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।