ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকায় বসেছে পিঠার মেলা

সাব্বির আহমদ, স্টাফ করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৫
ঢাকায় বসেছে পিঠার মেলা ছবি: কাশেম হারুন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ষড়ঋতুর বাংলাদেশে পৌষ-মাঘ মাস বাঙালি জীবনে আসে অতিথির মতোই। আর অতিথি আপ্যায়নের মতোই ঘরে ঘরে জমে ওঠে উৎসব আমেজ।

শীতের আয়োজন আর পিঠা হবে না, তাকি হয়! শীত মানেই পিঠা-পুলির উৎসব। তবে রাজধানীর কর্মচঞ্চল জীবনে যেন ভাটা পড়েছে সেই রীতির।

শহুরে জীবনেও বাঙালির সেই সংস্কৃতির ছোঁয়া এনে দিতে শুক্রবার (০৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে রকমারি পিঠার আয়োজন নিয়ে রাজধানীর বিজয় সরণির সামরিক জাদুঘর মাঠে শুরু হয়েছে ‘ফুড ফেস্টিভ্যাল’। খাবার ভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘ঢাকা ফুডিস’ বাঙালির আদি সংস্কৃতির অঙ্গ পিঠাপুলির এ উৎসবের আয়োজক।

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসবে একশ’ টাকা মূল্যের টিকিট সংগ্রহ করেই প্রবেশ করতে পারবেন যে কেউ। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে উৎসব প্রাঙ্গণ। সঙ্গে রয়েছে সাংস্কৃতিক আয়োজন, ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টসহ আরো অনেক কিছু।

আয়োজকরা জানান‍, এর আগে কেক ও বিরিয়ানী ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছি। ঢাকায় পিঠার এরকম বড় আয়োজন এবারই প্রথম। ৪০টির বেশি পিঠা প্রস্তুতকারী স্টল ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছে। এরকম আয়োজনে অংশ নিতে পেরে তারা রকমারি পিঠা প্রদর্শন ও বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন।

মেলার সাত নম্বর স্টলে শর্মিস ফুড কর্নারে দেখা গেল কয়েক ধরনের পিঠার পসরা সাজানো। এখানে বিক্রি হচ্ছে পিঁয়াজের পায়েস, প্যান কেক, পুডিং, দই বড়া, চালের রুটি, দই পিঠা, সেমাই পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, সরু পিঠা, গুরুর কারি, আমলকি আচারসহ নানা পিঠাপুলি।

শর্মিস ফুড কর্নারের কর্ণধার আইরিন পারভিন শর্মি বাংলানিউজকে বলেন, মোহাম্মদপুরে বাসায় নিজেই রকমারি পিঠা তৈরি করি। বাসা থেকে অনেকেই অর্ডার দিয়ে পিঠা নিয়ে যান। শুরু থেকেই বেশ সাড়া পাচ্ছি। ভবিষ্যতে ঢাকায় একটি পিঠা কর্নার গড়ে তোলার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন তিনি।  

‘কাপিস’ নামের আরেকটি স্টলে পিঠা প্রদর্শনে ব্যস্ত দুই তরুণী। তাদের একজন অনামিকা বিনতে রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ৮টিরও বেশি আইটেম এখানে প্রদর্শন কর‍া হচ্ছে। কোনো দোকান বা প্রতিষ্ঠান নয়, বাড়ি থেকেই পিঠা তৈরি করে বিক্রি করা হয়।

এ স্টলে পাওয়া যাচ্ছে ‘স্কিকার’ ও ‘কিককেট’ নামের ব্যতিক্রমী দুই পিঠার আইটেম।
 
সপরিবারে পিঠা উৎসবে ঘুরছেন ধানমণ্ডির বাসিন্দা ব্যাংকার সালাম উদ্দিন।

তিনি বলেন, ব্যস্ততার কারণে সন্তানদের পিঠাপুলির স্বাদ দিতে পারি না। ঢাকায় এরকম ব্যতিক্রমী আয়োজন সে স্বাদ অনেকটা পূরণ করবে।

পিঠা উৎসবের বিভিন্ন স্টলে ঘুরে দেখা গেছে রস পাকান, পাটিসাপটা, মালপোয়া, ঝিকিমিকি, ফুলপিঠা, মুগ পাকান, দই চিতই, তিলের পিঠা, ভাপা পিঠা, ডিমসাপটা, নারকেলি পিঠা, সবজি পিঠা, জামাইতোষণ পিঠা, মুখ সুন্দরী, জামাইপিঠা, ঝিনুক পিঠা, চুসি পিঠা, দুধ চিতই, বিবিখানা, দুধ পাকান, ঝালপাপড়ি,  ম্যারা পিঠা, নাইওরি পিঠাসহ অনেক রকম পিঠা প্রদর্শন ও বিক্রি হচ্ছে ফেস্টিভ্যালে।

ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজক ঢাকা ফুডিসের তাহরিরুর রহমান ফাহিম বাংলানিউজকে বলেন, দু’দিনব্যাপী পিঠা উৎসবে ৪০টিরও বেশি স্টলে শতাধিক আইটেমের পিঠাপুলি রয়েছে। এ ধরনের আয়োজন পিঠার ক্রেতা ও প্রস্তুতকারীদের সঙ্গে একটি মেলবন্ধন তৈরি করবে।

তিনি আরও জানান, ঢাকা ফুডিসের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পিঠা নিয়ে রিভিউ করা যাবে। এতে কোন জাতের পিঠা কোথায় পাওয়া যাচ্ছে তারও খোঁজ জানা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।