ঢাকা: ‘যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর বিচার: রায়ের পূর্ণ বিবরণ’ নামে বই প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা ‘পাললিক সৌরভ’। এটি সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া ইংরেজি রায়ের বাংলা অনুবাদ।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর লালমাটিয়ার উদ্দীপন বিদ্যালয়ে এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- শিল্পী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. আলীম চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলি নাসরিন চৌধুরী, সাংবাদিক মোস্তফা হোসাইন, লেখক পিনাকী ভট্টার্য, প্রকাশক মেহেদী হাসান শোয়েব ও তামান্না সেতু।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফেরেদৌসী প্রিয়ভাষিণী বলেন, ৭১ এর পর কোনো দুঃখ-কষ্ট আমাকে কাঁদাতে পারেনি। এমনকি আমার মায়ের মৃত্যুর পরও আমি কাঁদিনি। অনেকে ভুল বুঝেছে। আসলে ৭১ এ এতবেশি কেঁদেছি, তারপর আমার চোখে পানি আসেনি।
তিনি বলেন, বিলাপের সময় এখন না। মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়। আজকের এই প্রকাশনা অনেক ভালো হয়েছে। এই প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে এটা বড় আনন্দের, প্রাপ্তির।
ফেরদৌসী বলেন, তরুণ সমাজ আমার কাছে আলোক প্রতীক। আমি তাদের খুব বেশি ভালোবাসি। তরুণদের প্রতি আমার প্রত্যাশা; বিভাজন ভুলে ঐক্যের বিকল্প নেই।
সাকার বিচারের রায়ের সম্পর্কিত বইয়ের মোড়ক অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ১৯৮৩ সালে আমি কানাডিয়ান হাইকমিশনে সিনিয়র ক্যারানির কাজ করতাম। আমার কাজ ছিল সিকিউরিটির। গেটে কেউ এলে পরিচয় নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে দিতাম। একদিন একজন লোক এলো, আমি তার পরিচয় জানতে চাইলে জাবাবে বললো, ‘আমি তোর বসের বাপ। ’ পরে ফাস্ট সেক্রটারি এলো, তিনি তাকে বিনয়ের সঙ্গে রিসিভ করে নিয়ে গেলেন। এরপর আমাকে শোকজ করা হলো, আমি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছি। শেষমেষ আমার চাকরিটা চলে গেলো। সেই ব্যাক্তি ছিল, সাকা চৌধুরী।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর ২৯ বছর আমাদের সিলেবাসের বাইরের সরকার ছিল। বৈরি পরিবেশে সম্রাজ্য চলেছে। এখন যে অবস্থা তাতেও মিলাদ পড়াবার সুযোগ নেই। তবে, এখন যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে। এই বিচার করাটাও তো আমাদের জন্য আনন্দের!
বইটি সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলার সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের প্রকাশিত রায়ের ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ। যৌথভাবে ১২জন এর অনুবাদ করেছেন। সম্পাদনা করেছেন লেখক ফরিদ আহমেদ। বইটির দাম ৪০০ টাকা। আগামী বইমেলায় এটা পাওয়া যাবে। খুব শিগগিরই ই-বুক আকারে অনলাইনেও এই বই পাবে পাঠক, জানালেন প্রকাশক মেহেদী হাসান শোয়েব।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৫
এসইউজে/এসএইচ