ঢাকা: নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশের প্রয়োজন নেই বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এক নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোশতাক আহাম্মদ স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, ‘বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য পৃথক আচরণ বিধিমালা, শৃঙ্খলা বিধিমালা এবং বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস ( সার্ভিস গঠন, সার্ভিস পদে নিয়োগ ও বরখাস্তকরণ, সাময়িক বরখাস্তকরণ ও অপসারণ) বিধিমালা-২০০৭ সংশোধনকল্পে সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবিত খসড়া বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা নাই মর্মে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার এবং সংশ্লিষ্টদের এ নোটিশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
গত ০৮ ডিসেম্বর নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশ না করায় আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে সোমবার (১২ ডিসেম্বর) হাজির করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে মৌখিক নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আট বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
গত ০১ ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তা পালন না করে বৃহস্পতিবার আবারও সময় চান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এরপর আপিল বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হককে ১২ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আদালতে বলেছি- প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বিধিমালার সারসংক্ষেপটি রাষ্ট্রপতির কাছে গেছে। এটি প্রক্রিয়াধানীন। এজন্য দুই সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। এরপর আদালত দুই সচিবকে আগামী সোমবার আপিল বিভাগে আসতে বলেছেন’।
১৯৯৯ সালের ০২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিলো। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ০৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
গত ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিলো ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।
এর পরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। একইসঙ্গে ০৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করতে আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়।
গত ০৬ নভেম্বর সে অনুসারে মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেননি।
পরে আপিল বিভাগ বিধিমালা চূড়ান্তের বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা লিখিতভাবে জানাতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়ে ০৭ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য করেন।
ওই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল আট সপ্তাহের সময়ের আবেদন জমা দেন। যাতে বিধিমালাটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি। সর্বোচ্চ আদালত ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেন।
২৪ নভেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল গেজেট প্রকাশে আরও এক সপ্তাহ সময় চাইলে আপিল বিভাগ তা মঞ্জুর করেন। পরে ০১ ডিসেম্বর আইনমন্ত্রী ফিলিপাইনে রয়েছেন বলে ফের এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়। সময় মঞ্জুরের পর বৃহস্পতিবার আবেদনটি আবার কার্যতালিকায় আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬
ইএস/এএসআর