ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রেল যোগাযোগের উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক জানিয়েছেন, রেলের উন্নয়নে নতুন চমক আসছে, যা কিছুদিন পর দেখা যাবে।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কমলাপুর রেল স্টেশনে 'সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস'র নতুন কোচ উদ্বোধন করেন তিনি।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে বুলেট ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সেজন্য আলোচনা চলছে। এখনো অর্থায়নের নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। অর্থায়নের নিশ্চয়তা পেলে বুলেট ট্রেনের জন্য রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু করব।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল যোগাযোগ ২০১৮ সালের মধ্যে চালু হবে। এজন্য চলতি মাসেই রেললাইন নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করা হবে।
পদ্মা সেতুতে ২০১৮ সালে যান চলাচলের সঙ্গে সঙ্গে যেন রেলও চলাচল শুরু হয় এমন উদ্যোগ এবং বঙ্গবন্ধু সেতু ও কর্ণফুলি পাশে আলাদা করে রেল সেতু নির্মাণ করার পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে রেলপথ ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। রেল নিয়মিত চলতো না, রেলের ইঞ্জিন, বগি ছিলনা, রেলপথ ছিল ক্ষয়িষ্ণু ও জরাজীর্ণ। সেই রেলপথকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রেলপথ বিভাগ থেকে ২০১১ সালে রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠিত হয়। লক্ষ্য রেলের মাধ্যমে জাতিকে সেবা দেওয়া।
মুজিবুল হক আরো বলেন, যতো পরিবহন আছে সবচেয়ে সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও আরামদায়ক হচ্ছে রেল। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী জানেন বিধায় বর্তমানে রেলের উন্নয়নে ৪৮টি প্রকল্প চলমান আছে, লক্ষ্য রেলপথকে পুনর্বাসন করা।
২০১৩ সাল থেকে সিরাজগঞ্জে নিয়মিত রেল চালু এবং আজ থেকে নতুন কোচ সংযোগ হওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমকে উদ্দেশ্য করে রেলমন্ত্রী বলেন, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এজন্য নাসিম ভাইয়ের এলাকা হিসেবে আমি তার কাছে মিষ্টি পাওনা।
এর পরেই বক্তব্য দিতে আসেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনিও রেলের উন্নয়নের জন্য রেলমন্ত্রী ও তার স্ত্রীর জন্য মিষ্টি পাঠানোর আশ্বাস দেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রেলমন্ত্রী আসলে ‘এক্সপ্রেস মন্ত্রী’। তিনি এক্সপ্রেসে চলেন আর উন্নয়ন করেন। রেলের উন্নয়নে যে কথা দিয়েছেন তার সবগুলোই পালন করেছেন তিনি।
রেলের অনুষ্ঠানে এলে বাবার কথা মনে পড়ে- এমন স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমার বাবা মনসুর আলী স্বাধীন দেশে প্রথম রেলপথমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীপরিষদে কাজ করেছেন।
রেলপথ গরীবের পথ মন্তব্য করে নাসিম বলেন, রেলে খেটে খাওয়া দিনমজুর, শ্রমিক, সাধারণ মানুষ চলে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত সরকার জনসাধারণের কথা না চিন্তা করে তার বিদেশি বন্ধুদের কথা শুনে পথটিকে অচল করে দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর রেলপথে আবার প্রাণের সঞ্চার হয়। এখন নতুন নতুন রেলপথ হচ্ছে, নতুন ট্রেন আসছে।
প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রেলপথের উন্নয়নে যারা এগিয়ে এসেছেন সেসব বিদেশি বন্ধুদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিরাজগঞ্জের আরেক কৃতিসন্তান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী রেলের গুরুত্ব বুঝেছেন। আর এজন্যই অতীতের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিনি সড়কের চেয়ে রেলে বেশি বরাদ্দ ও কাজ দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে শুধু রেলের নতুন লাইনের কাজই চলছে না, নতুন নতুন ট্রেনও আসছে। পুরো দেশেই এখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়ন হচ্ছে। এভাবে এগিয়ে গেলে রূপকল্প ২০২১ পেতে আর বেশি দেরি হবে না।
এরপর আমন্ত্রিত সব অতিথিদের উপস্থিতিতে রেলমন্ত্রী সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের নতুন কোচ উদ্বোধন করেন। পরে তারা নতুন কোচের ভেতরে ঘুরে দেখেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফিরোজ সালাউদ্দিন, রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবীবে মিল্লাত প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬
পিএম/এসএইচ