ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যশোরে কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম (ভিডিও সহ)

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬
যশোরে কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম (ভিডিও সহ) বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শীতের শুরুতেই যশোরে কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম পড়েছে। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়িতে চালকুমড়া ও মাষকলাইয়ের ডাল দিয়ে বড়ি তৈরি করতে শুরু করেছেন গৃহবধূরা।

যশোর: শীতের শুরুতেই যশোরে কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম পড়েছে। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়িতে চালকুমড়া ও মাষকলাইয়ের ডাল দিয়ে বড়ি তৈরি করতে শুরু করেছেন গৃহবধূরা।

শীতের এক সকালে কেশবপুরের কড়িয়াখালী ঘোষপাড়ার একটি বাড়ির ছাদে কয়েকজন গৃহবধূকে বড়ি বানাতে দেখা গেলো।

তাদেরই একজন কড়িয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বন্দনা রানী।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি শীত এলে চালকুমড়া ও মাষকলাইয়ের (স্থানীয়দের ভাষায় ঠিকরী কলাই ) ডাল দিয়ে বড়ি তৈরি করেন তারা। ওই বড়ি রোদে শুকিয়ে কৌটায় সংরক্ষণ করা হয় দীর্ঘদিন। পরে বিভিন্ন তরকারি রান্নার সময় বড়ি ছেড়ে দিলে স্বাদ বেড়ে যায়।

বড়ি তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বড়ি দেওয়ার আগের দিন মাষকলাইয়ের ডাল খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সন্ধ্যায় চালকুমড়ার খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের নরম অংশ ফেলে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর কোরানি দিয়ে কুমড়া কুরিয়ে মিহি করে পরিষ্কার কাপড়ে বেঁধে সারারাত ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এতে কুমড়ার পানি বের হয়ে ঝরঝরে হয়ে যাবে।

পরদিন ভোরে মাষকলাই ডালের পানি ছেঁকে মিহি করে বাটতে হবে। পানি ঝড়ানো কুমড়ার সঙ্গে প্রায় সমপরিমাণ ডাল ও হালকা লবন দিয়ে ভালো করে মেশাতে হবে। পরে কড়া রোদে পরিষ্কার কাপড়, চাটাই বা নেটের ওপর ছোট ছোট করে বড়ি দিতে হবে। এটা ভালো করে রোদে শুকিয়ে কৌটায় সংরক্ষণ করে অনেকদিন পর্যন্ত রান্না করা যায়।

তিনিসহ কয়েকজন নারী জানান, বড়ি তেলে ভেজে মাছের তরকারি বা সবজিতে দিলে স্বাদ অনেক বেড়ে যায়।      

একই ছাদে বড়ি দিতে আসা প্রীতিকণা রানী ও তপতি রানী বাংলানিউজকে জানান, শীত এলেই একে অপরকে বড়ি দিতে সহযোগিতা করা রেওয়াজে পরিণত  হয়েছে। বছর ত্রিশেক আগে শ্বশুর বাড়িতে এসে শাশুড়িদের কাছ থেকে এ রেওয়াজ শিখেছেন তারা। তবে নতুন প্রজন্মের বেশিরভাগ মেয়ে এসব শিখতে বা তৈরি করতে আগ্রহী না।

স্থানীয় নারীরা জানান, যুগ যুগ ধরে শীত মৌসুমে যশোরের গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতে কুমড়া বড়ি দেওয়ার রেওয়াজ চলে আসছে। সময়ের আবর্তে বড়ি-পিঠাও এখন বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তারপরও গ্রামের অনেক মানুষ বাড়িতে বড়ি তৈরি করে খেতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬
ইউজি/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।