ঢাকা: দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের আদলে ঢাকায় সোডিয়ামের বদলে এলইডি বাল্ব ও সিসিটিভি স্থাপন করা হবে। একটি কন্ট্রোলরুম থেকে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
সিটি কর্পোরেশনের সেবাদানকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন সহজ করে দেবে এসব এলইডি লাইট এবং সিসিটিভি। খুব সইজেই অবৈধ পেশা, অবৈধ পার্কিংসহ অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি নগরবাসীর নিরাপদ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা যাবে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্র জানায়, অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য সম্প্রতি ডিএনসিসি’র কিছু কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু শহর ঘুরে দেখেছেন। সবশেষে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের আদলে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এলইডি সড়ক বাতি, সিসিটিভি ক্যামেরা ও সিসিটিভি কন্ট্রোল সেন্টার সরবরাহ ও স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এলইডি লাইট ও সিসিটিভি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ডিএনসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ও আইসিটি শাখার প্রধান লে. কর্নেল আজাদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা বিশ্বের কয়েকটি দেশে কিছু উন্নত প্রযুক্তি দেখেছি। পরে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের আদলে এলইডি লাইট ও সিসিটিভি স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি’।
সূত্র জানায়, ৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার আয়তন প্রায় ৮২ দশমিক ৩৬ বর্গকিলোমিটার। এসব এলাকার প্রায় ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার সড়ক ও ২৩০ কিলোমিটার ফুটপাত রয়েছে। এসব সড়ক-ফুটপাতজুড়ে প্রায় ৪৫ হাজার হাই প্রেসার ও লো-প্রেসার সোডিয়াম এবং টিউব লাইট রয়েছে। এসব সোডিয়াম ও টিউব লাইটের পরিবর্তে আধুনিক, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব এলইডি সড়ক বাতি স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫ হাজার সিসিটিভি স্থাপন করা হবে। নাগরিকদের গুণগত ও সিটিজেন সার্ভিসগুলো সরবরাহ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সিসিটিভি স্থাপনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা হবে। এজন্য ডিএনসিসি’র নগর ভবনে উন্নতমানের ইন্টারগ্রেটেড সিসিটিভি কন্ট্রোল সেন্টার স্থাপন করা হবে।
সমস্ত সড়কেই এলইডি সড়ক বাতি বসলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় এলইডি লাইটগুলো সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে ডিএনসিসি। অন্ধকার দূর হওয়ার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদেরও দায়িত্ব পালন করতে কোনো অসুবিধা হবে না। সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরবাসীও রাতে নিশ্চিন্তে চলাচল করতে পারবেন। আর সিসিটিভি নিরাপত্তা অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে।
সব মিলিয়ে এসব এলইডি লাইট ও সিসিটিভি যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক সিটিতে রুপান্তরে অবদান রাখবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পাইলট প্রকল্প হিসেবে নগরীর কিছু কিছু স্থানে এসব চালুও হয়েছে। শাহবাগসহ এসব এলাকায় স্বল্প পরিসরে চিরচেনা সোডিয়াম লাইট বদলে দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে নগরীকে আলোকিত করে আসা সোডিয়াম বাতিগুলোর বদলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি বাতি স্থাপন করা হয়েছে। তুলনামুলক কম বিদ্যুৎ খরচে বেশি আলো পাওয়া যাচ্ছে সড়কের এলইডি বাতিতে।
এলইডি লাইট ও সিসিটিভি স্থাপনে সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় হবে ৪৪৫ কোটি টাকা। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যেই এলইডি সড়ক বাতি ও সিসিটিভি স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ডিএনসিসি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর