ঢাকা: ‘সামনে ১৬ ডিসেম্বর, আমগো বিজয় দিবস। দিনটারে পালন করার জন্য এখন থেইক্যা পতাকা লাগাইছি।
রিকশার হ্যান্ডেলের সামনে বাঙালি জাতির বিজয়ের প্রতীক, আবেগ-ভালোবাসার চিহ্ন- ‘জাতীয় পতাকা’ লাগিয়েছেন রিকশাচালক বিপুল হাসান। পতাকা লাগানোর সঙ্গে জড়িয়ে তার মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা-শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) আগারগাঁও বিমানবাহিনী জাদুঘরের সামনে দেখা হয় তার সঙ্গে। জাতীয় পতাকা লাগানোর কারণ জানতে চাইলে, চোখ-মুখ
উজ্জ্বল করে কথাগুলো বাংলানিউজকে বলেন এই রিকশাচালক।
শুধু বিপুলের রিকশা নয়, বিজয় দিবস উদযাপন ও মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাতে, বিজয়ের নিশান পতপত করে উড়ছে রাজধানীতে চলাচলকারী বাস, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন গণপরিবহনে।
৭১ সালে ত্রিশ লাখ শহীদ ও দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬
ডিসেম্বরে আসে কাঙ্ক্ষিত বিজয়। তাই সারাদেশে এ মাসজুড়ে চলে লাল-সবুজের সমারোহ। বিজয়ের স্বাদ নিতে গাড়ি, বাড়ি, দোকানপাট- সব জায়গায় পতাকা লাগায় মানুষ।
ফজলু মিয়া তার আটোরিকশার দুই দিকে দু’টি পতাকা লাগিয়েছেন।
‘যুদ্ধ করে এই দ্যাশটারে পাইছি, এটা যে কতো ভাগ্যের বিষয়- তা কওনের মতো না। এই মাসটা আইলে আমার কেন জানি খুউব ভালো লাগে, আনন্দ লাগে। ১৬ ডিসেম্বরের দিনে মাথা লাগানোর একটা ব্যান্ড কিনমু। হাতের বেসলেট (ব্রেসলেট) পরমু ইচ্ছা আছে। বাচ্চা দুইটারে পতাকাওয়ালা গেঞ্জি কিইন্যা দিছি। ’
পতাকা লাগানো থেকে বাদ যাননি লেগুনার ড্রাইভার আসাদ। আসাদ বলেন, জাতীয় পতাকা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের গর্ব। এখন যা করে খাচ্ছি, স্বাধীন হইছে বলেতো খাইতে পারছি। দেশটারে আমি অনেক ভালোবাসি, কোনো দুঃখ নাই।
আর একদিন পর বিজয়ের সেই কাঙ্ক্ষিত দিন। পুরো জাতি একাট্টা হয়ে
পালন করবে দিনটি। এসব খেটে খাওয়া মানুষের মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ ও দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা শুনলে হেলাল হাফিজের জাতীয় পতাকা নিয়ে লেখা ‘কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে/আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে...’ কবিতাটির এই লাইনটি সত্য মনে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
এমসি/এসএনএস