আর্মি গল্ফ ক্লাব (কুর্মিটোলা) থেকে: মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম যোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফের কথা উঠে আসলো বার বার। ভারতীয় যে যোদ্ধারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য লড়াই করেছেন তারা আজ সেই সাহসী যোদ্ধার কথাই স্মরণ করলেন।
আর্মি গল্ফ কোর্স কুর্মিটোলায় মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলার আসরে দুই দেশের যোদ্ধারা একত্রিত হন। একাত্তর টেলিভিশন ও ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনের যৌথ আয়োজনে এই আসর বসে।
তাতে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর যোদ্ধারাই কেবল নন, উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি জগতের যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন তারাও।
তাদের মাঝে ছিলেন খালেদ মোশাররফের মেয়ে মাহজাবিন খালেদও।
ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের কথায় তার বাবার প্রসঙ্গ আসায় তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। মাহজাবিন খালেদ বলেন, খালেদ মোশাররফ আজ আর আমাদের মাঝে নেই। জাতির জনককে হত্যা করার পর তাকেও হত্যা করে সে সময়ের খুনি চক্র।
বাবার স্মৃতির কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় আমি ছোট ছিলাম কিন্ত সেনাবাহিনীর ভেতরে থাকায় আমি যুদ্ধ খুব কাছে থেকে দেখেছি।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি সেনাদের প্রধানতম লক্ষ্য ছিলো মেজর খালেদকে কব্জা করা। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। তখন তারা আমাদের পিছু নেয়। তারা জানতো পরিবারকে আটকে ফেলতে পারলে খালেদ মোশাররফকে পাওয়া যাবে।
এসময় আমরা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে পালিয়ে বেড়াই। আর যেখানেই আশ্রয় চাইতাম সবাই না করে দিতো। কারণ তারা জানতো আমাদের আশ্রয় দিলে তাদেরই বিপদ। প্রতিমাসেই আমাদের আশ্রয় পাল্টাতে হতো। একটি বাড়িতে আশ্রয় পেলাম যে বাড়ির কর্তার খালেদ নামের একটি ছেলে ছিলো। তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ্ওই ভদ্রলোক তাই দয়াপরবশ হয়ে আমাদের দুই বোনকে আশ্রয় দিলেন।
আমাদের খোঁজ তখন কেউ জানতো না। আমরা দুই বোন এক সঙ্গে ছিলাম। মা যখন বাবাকে চাপ দিচ্ছিলেন মেয়েদের খুঁজে করার জন্য, বাবা বলেছিলেন আমি যদি মেয়েদের খুঁজি-তাহলে যুদ্ধ কে করবে, যুদ্ধ কে দেখবে?
পরে অপহরণের নাটক সাজিয়ে খালেদ মোশাররফ কিভাবে দুই মেয়েকে কাছে নিয়ে যান তারও গল্প শোনান মাহজাবিন।
** লে. জেনারেল সিহোতা শোনালেন মানবতা ও সাহসিকতার গল্প (ভিডিও)
***হেমন্ত সারদেশাই ঠেকিয়ে দেন নিয়াজির পলায়ন
** বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধন রক্ত দিয়ে লেখা
** মুক্তিযুদ্ধের গল্প আসরে বাংলাদেশ-ভারতের যোদ্ধারা
বাংলাদেশ সময় ১৪৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এমএমকে