ঢাকা: দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বাহিনীর সুনাম ধরে রাখতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সকলে দেশপ্রেম, সততা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে নিজ দায়িত্ব পালন করবেন।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে পিলখানায় বিজিবি দিবসের দরবারে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজিবির সদস্য হিসেবে আপনাদের আনুগত্য ও বিশ্বস্ততা প্রশ্নাতীত। কর্মকর্তা ও সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ, শৃঙ্খলাবোধ, মানবিকতা এবং সর্বোপরি পারস্পরিক সহানুভূতিশীলতাই এই বাহিনীর বন্ধন দৃঢ়তর করবে। ভবিষ্যতের সবাই বাহিনীর নিজস্ব শৃঙ্খলার বিষয়টি ভালোভাবে জেনে নিবে এবং চর্চা করবে।
মায়ানমারে রোহিঙ্গা সমস্যায় সীমান্তে উত্তেজনা, রামুর বৌদ্ধ পল্লীর নিরাপত্তা, পার্বত্য এলাকার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও ছিটমহলবাসীর পুনর্বাসনে বাহিনীর ভূমিকা প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন পদক্ষেপ বিজিবির সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধি করছে। সীমান্ত রক্ষা, অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রাকৃতিক কিংবা সামাজিক যে কোন দুর্যোগে বিজিবি সদস্যদের অবদানের প্রশংসা করেন।
বিজিবির নবীন সদস্যদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার ওপর গুরুত্বাপরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজিবি সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি, পেশাদারিত্ব তৈরি, জোয়ানদের আবাসনসহ সার্বিক উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন ২০১০ পাস, বিজিবি পুনর্গঠনের ধারায় নতুন ৪টি রিজিয়ন, ৪টি সেক্টর এবং ৪টি রিজওনাল ইন্টিলিজেন্স ব্যুরো প্রতিষ্ঠা প্রতিষ্ঠা, নতুন ১৫টি ব্যাটেলিয়ন স্থাপন, সীমান্তে সক্ষমতা বাড়াতে ২০০৯ সাল থেকে বিজিবিতে ২৪ হাজার ২২৪ জন লোক নিয়োগ, নারীদের নিয়োগ, ২৯৮ বিওপি এবং বিএসপি নির্মাণ, বিজিবির অপারেশন জোরদার করতে পর্যাপ্ত যানবাহন সরবরাহ, সীমান্তে ৯শ’ ৩৫ কিলোমিটার, পার্বত্য অঞ্চলের ৪৭৯ কিলোমিটার পাহারায় নতুন দুটি সেক্টর, ৫টি ব্যাটেলিয়ন এবং ৯২টি বিওপি স্থাপন চলছে, বিজিবির লজিস্টিক সরঞ্জাম বাড়ানো, সদস্যদের প্রশিক্ষণ জোরদার, এয়ার উইং সৃষ্টি, ডগ স্কোয়াড গঠন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া বাৎসরিক ছুটি ২ মাস, সীমান্ত ভাতা মূল বেতনের ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি, রেশন ৬০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ, অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধি, ৪১ হাজার ৮১৬ জনকে টাইম স্কেল প্রদান, বিজিবি সন্তানদের লেখা পড়ার জন্য বিজিবি ছাত্রাবাস এবং ছাত্রীনিবাস নির্মাণ, সীমান্ত ব্যাংক প্রতিষ্ঠাসহ বিজিবি সদস্যদের কল্যানে নেওয়া বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
দরবারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিজিবি দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে পিলখানায় সদর দপ্তরের বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন।
সেখানে প্রধানমন্ত্রী এ বছর বীরত্ব ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিজিবি সদস্যদের মধ্য থেকে ১০ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক, ২০ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক, ১০ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক-সেবা এবং ২০ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক-সেবা পরিয়ে দেন।
** কমে এসেছে সীমান্ত অপরাধ: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
এমইউএম/এমজেএফ/