পিরোজপুর: পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদীর হাত থেকে সম্মাননা নেওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে পিরোজপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এম. মতিউর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জিয়ানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মাসুদ সাঈদী নির্বাচিত হন। এরপর থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের চাপের মুখে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী উপস্থিত থাকতে পারেন নি।
এ বছর বিজয় দিবসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদ্বোধনী ভাষণ দেন।
পতাকা উত্তোলন শেষে পায়রা উড়ানোর সময় পেছনে থেকে হঠাৎ করে মাসুদ সাঈদী পতাকা মঞ্চে ওঠেন। পরবর্তী মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি কোনো বক্তব্য না দিলেও পুরস্কার বিতরণের সময় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বেলায়েত হোসেন হাওলাদারের পাশে দাঁড়ান এবং পুরস্কার দেওয়ার চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃধা মো. মনিরুজ্জামান মনির তাকে বাধা দেন। এসময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের তোপের মুখে মাসুদ সাঈদী দ্রুত মাঠ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে বিকেল ৫টার মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।
মাসুদ সাঈদী পূর্ব পরিকল্পিত, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ইচ্চাকৃত অনাকাঙ্খিত ঘটনা সৃষ্টির জন্য অনুষ্ঠানের কিছু ছবি সংগ্রহ করে তা নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা নেতাকর্মীরা নিন্দা জানাচ্ছি।
ভবিষ্যতে মাসুদ সাঈদীর এ ধরনের ঘৃণিত কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করলে আমরা যে কোন মূল্যে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করব।
এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মতিউর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কামন্ডার সমীর দাস বাচ্চু, জিয়ানগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও সাঈদী মামলার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মাহাবুবুল আলম, জিয়ানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৃধা মো. মনিরুজ্জামান, পত্তাশী ইউপি চেয়ারম্যান হাওলাদার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন নবীন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
আরএ