সিরাজগঞ্জ: চলতি শীত মৌসুমে বর্ষা-বাদল নেই, পানিও কম। তবুও ভেঙেই চলেছে যমুনার পাড়।
সরেজমিন শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের চর বাহুকা ও শুভগাছা এবং খুদবান্দি এলাকার স্থানীয়রা ভাঙনের বর্ণনা দেন।
কথা হয় চর বাহুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলুল হক, একই গ্রামের ময়দান আলী, শাওন, আছা আলী, আতিয়া খাতুন, বকুল খাতুন ও জহুরুল ইসলামের সঙ্গে।
ভাঙন কবলিত এসব মানুষ জানান, দুই মাস ধরে ছোনগাছা ইউনিয়নের চর বাহুকা থেকে শুরু করে কাজিপুরের শুভগাছা ইউনিয়নের ঘাটি শুভগাছা পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব অঞ্চলের শতাধিক বাড়ি-ঘরসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরও দুই শতাধিক পরিবার ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। একাধিকবার নদী ভাঙনের কবলে পরে এ সব পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে বলেও জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা আরও জানান, যমুনা নদী ভাঙতে ভাঙতে এখন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মাত্র ২০ ফুট দূরে অবস্থান করছে। যেকোনো মূহুর্তে এ বাঁধটিও ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে এসব অঞ্চলের মানুষেরা চরম আতঙ্কে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে ভাঙন কবলিতরা জানান, পাউবো’র লোকজন বার বার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করলেও গুটি কয়েক জিও ব্যাগ বালির বস্তা সাজিয়ে রাখা ছাড়া আর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। গত বছর পাউবো’র ড্রেজিং মেশিন দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় রাখলেও তা দিয়ে কোন কাজ করানো হয়নি।
সিরাজগঞ্জ পাউবো’র সেকশন অফিসার (এসও) রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, টুটুল মোড়ের পাশে যমুনা নদীর মাঝখানে বিশাল চর জেগে উঠেছে। এতে যমুনার স্রোত সরাসরি তীরে আঘাত হানছে। ফলে চর বাহুকা থেকে শুরু করে শুভগাছা ও ক্ষুদবান্ধি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, সদর উপজেলার শিমলা থেকে কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়নের টুটুলের মোড় পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকায় নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পটি পাস হলে এলাকার ভাঙন স্থায়ীভাবে রক্ষা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬
আরএ