ঢাকা: কাজ শেষ হতে না হতেই খানা-খন্দ তৈরি হয়েছে ফোরলেনে রূপান্তরিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। ০৮ শতাংশ কাজ অসমাপ্ত রেখে গত ০২ জুলাই উদ্বোধন করা হয় কুমিল্লার দাউদকান্দি টোলপ্লাজা থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত ১৯২ দশমিক ৩ কিলোমিটার মহাসড়কটির।
সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার পর পরই নবনির্মিত সড়কের কিছু স্থানে ইউটার্নিং পয়েন্টের ওপেনিং সিসি ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত এবং কিছু স্থানে যানবাহনের চাকায় খানা-খন্দ তৈরি হয়েছে। কিছু খানা-খন্দ মেরামত করা হলেও আরও কিছু স্থানে ভেঙ্গে গেছে ইউটার্ন পয়েন্ট।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সরেজমিন প্রতিবেদনে জানানো হয়, মহাসড়কের মিডিয়ান ও উভয় পাশে গাছ লাগানো, সাইন, সিগন্যাল ও পোস্ট স্থাপন এবং রোড মার্কিংয়ের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তিনটি সেতু নির্মাণ প্যাকেজের আওতায় একটির (ফেনী) রেলওয়ে ওভারপাসের কাজ ৪৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। কুমিল্লা রেলওয়ে ওভারপাসের দুই লেনের মধ্যে একলেন নির্মাণ বাকি রয়েছে। এছাড়া ১০টি সড়ক নির্মাণ প্যাকেজের আওতায় প্রকল্পের অপর্যাপ্ত শোল্ডার বিশিষ্ট স্থানগুলোতে মাটি ফেলার কাজ, গাছ লাগানো, পরিচর্যা, সাইন সিগন্যাল স্থাপন, রোড মার্কিং কাজেরও ১০ শতাংশ অসমাপ্ত রয়েছে।
অবশিষ্ট এসব কাজ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এজন্য সেনাবাহিনীকে অনুরোধও জানিয়েছে বিভাগটি।
সদ্য সমাপ্ত প্রকল্পের খানা-খন্দ মেরামতে আলাদা প্রকল্প বা কর্মসূচির আওতায় করতে চায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। এ লক্ষ্যে আরও ছয়মাস সময় বাড়াতে আইএমইডি’র মতামত চেয়েছে সংস্থাটি। পুরো কাজ শেষ করতে চলতি ডিসেম্বরে সমাপ্ত হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ ছয়মাসের মেইনটেন্যান্স পিরিয়ডসহ আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়াতে চায় সওজ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোরলেনের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আফতাব হোসেন খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোরলেনের মূল কাজ সমাপ্ত হয়েছে। আইএমইডি’র প্রতিবেদনে সদ্য সমাপ্ত সড়কে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল, সেগুলোও ঠিক করা হয়েছে। তবে কিছু সড়কে রোড মার্কিং, সাইন সিগন্যাল স্থাপন ও লেখালেখির কাজ বাকি আছে। এগুলো মৌলিক কাজ নয়। এসব ছোট ছোট কাজ করতে সময় লাগবে না। বড় প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও একটা মেইনটেন্যান্স পিরিয়ড থাকে। তার সঙ্গে আরও ছয় মাস সময় চেয়েছি আমরা’।
২ হাজার ১৬৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। দ্বিতীয় ধাপে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর, তৃতীয় ধাপে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর এবং চতুর্থ ধাপে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। অন্যদিকে প্রকল্পের মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) থেকে ব্যয় বেড়ে প্রথম রিভাইজড ডিপিপি’তে ২ হাজার ৩৮২ কোটি ১৭ লাখ টাকা, বিশেষ ডিপিপি’তে ২ হাজার ৪১০ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় রিভাইজড ডিপিপি’তে ৩ হাজার ১৯০ কোটি ২৯ লাখ টাকা দাঁড়ায়।
এর মধ্যে গত নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ৯২ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩ হাজার ৮১৬ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা।
আইএমইডি জানায়, মূল অনুমোদিত মেয়াদের চেয়ে প্রকল্পটির সময় চার বছর ছয় মাস বেড়েছে। সেতু ও রেলওয়ে ওভারপাস দু’টি সম্পন্ন করতে গেলে প্রকল্পটির মেয়াদ ও ব্যয় আরও বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর