সাতক্ষীরা-যশোর থেকে ফিরে: পৌষের নিস্তব্ধ ভোরে শীতের স্বাভাবিক নিয়মে মুখ দিয়ে বের হচ্ছে ধোঁয়া। খুব সকালে খুলনা-সাতক্ষীরার পথটি জনশূন্য থাকায় খাঁ খাঁ করছিল।
হঠাৎ সবার চোখ আটকে গেলো প্রকৃতির অপূর্ব সৃষ্টি সরিষা ক্ষেতে। হলুদ সরিষা ফুলগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে মহাসড়কের যাত্রী ও পথিককে। আর তাতে মুগ্ধ হচ্ছেন সবাই।
পিচ ঢালা রাস্তা দিয়ে আমাদের মাইক্রোবাস যতই সাতক্ষীরার দিকে যাচ্ছে ততই যেন হলুদের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছেন সবাই। রাস্তার দুই ধারের সরিষা ক্ষেত দেখতে অপরূপ বললে কম হবে। যেখানে সরিষা ক্ষেত দেখা গেলো না সেখানে মিললো চিংড়ি ঘের অথবা সোনালী ধানের দোল খাওয়ার দৃশ্য। একদিকে সরিষা ফুলের রাজত্ব অন্যদিকে চিংড়ির ঘের ও ধানের ক্ষেতের নয়নাভিরাম দৃশ্য। শীতে প্রকৃতির রুক্ষতা-শুষ্কতা কাউকে স্পর্শ করতে দিচ্ছে না এমন মনোলোভা দৃশ্য। প্রকৃতিপ্রেমী অনেকেই গাড়ি থামিয়ে ফুলের নজরকাড়া দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছেন। একইসঙ্গে মনের গভীরে ধারণ করে নিয়ে যাচ্ছেন সরিষা ফুলের গন্ধে ভরা সুঘ্রাণ।
ডুমুরিয়া, সাতক্ষীরা ছাড়াও বেনাপোল, যশোরের মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের মহাসমারোহ। মহাসড়ক কিংবা গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে চললেই দেখা গেলো ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমাছি। পাখ-পাখালির কলতানে মুখরিত গ্রামের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে মাঠ জুড়ে সরিষা ফুল।
বেনাপোল থেকে খুলনা আসার পথে সবাই একবার হলেও তাকাচ্ছেন আদিগন্ত জোড়া ক্ষেতের দিকে। ফুলে ফুলে শোভিত বিশাল এ ক্ষেতের কারিগর কৃষক ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন।
রাস্তার দু’ধারে পথে-ঘাটে, মাঠে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ এবং বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে উজ্জ্বল হলুদ রঙের সরিষা ফুলের সমারোহ। দৃষ্টিনন্দন এ দৃশ্য দেখে যেনো জুড়িয়ে যায় সবার মন-প্রাণ।
যশোরের স্থানীয় বাসিন্দা প্রাইভেটকার চালক রাকিব বাংলানিউজকে বলেন, যশোর ফুলের রাজধানী। এখানে গোলাপ, ডালিয়া, কসমস, রজনীগন্ধা, এস্টার, গাঁদা, নানা ফুলের চাষ হলেও মাঠ ভরা সরিষা ফুলের দৃশ্য দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা উপভোগ করেন বেশি মুগ্ধতার সঙ্গে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৬
এমআরএম/জেডএস