এতে মাঝেমধ্যেই মহাসড়কের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। কিন্তু এতো কিছুর পরেও অজ্ঞাত কারণে মহাসড়কে বন্ধ হচ্ছে না এসব ফিটনেসবিহীন ট্রাকের অবাধ চলাচল।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই উপজেলার কালামপুর থেকে শিবালয়ের পাটুরিয়া ফেরি ঘাট এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব গোলড়া হাইওয়ে থানা ও বরংগাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির। মহাসড়কে নিয়মিতভাবে টহল কার্যক্রম ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিরাপত্তামূলক চেকপোস্ট থাকার পরেও অবাধে চলছে ওইসব ইট ও মাটিবাহী ট্রাক।
এছাড়া মহাসড়কের ওই ৪০ কিলোমিটার এলাকায় মহাসড়ক ঘেঁষে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশত ইটভাটা। নিয়মিতভাবে ওই ইটভাটাগুলোতে প্রবেশ করছে মাটিবাহী ট্রাক। আবার বের হচ্ছে ইটবোঝাই অবস্থায়। কিন্তু ইটভাটাগুলোতে একদিকে যেমন নেই কোন গেটম্যান আবার অপরদিকে অধিকাংশ ট্রাক চালকের নেই কোন সহকারী। এতে মহাসড়কে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ফলে মহাসড়কে নিয়মিতভাবে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহন ও মোটরসাইকেল চালকেরা রয়েছেন হতাশায়।
মহাসড়কের পাটুরিয়া থেকে ঢাকাগামী যাত্রীসেবা পরিবহনের চালক শাকিল হোসেন জানান, মাটি ও ইটবোঝাই ট্রাকের অধিকাংশ চালকেরা অদক্ষ্য। মহাসড়কে যানবাহন চালানোর মতো সাধারণ ধারণাও তাদের নেই। এই সমস্ত ট্রাক চালকদের কারণে মহাসড়কে প্রায়ই বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে।
সেলিম হোসেন নামের এক মোটরসাইকেল চালক বাংলানিউজকে জানান, হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশের কারণে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বৈধ কাগজপত্র, লাইসেন্স এবং হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো সম্ভব নয়। অবশ্যই এ বিষয়টি পুলিশের একটি ক্রেডিট এবং চালকদের জন্যে যুগোপযোগী একটি পদক্ষেপ। কিন্তু মহাসড়কে এতো পুলিশি তৎপরতার পরেও ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স ছাড়া অবাধে ট্রাক চলাচলের বিষয়টি খুবই প্রশ্নবিদ্ধ একটি ব্যাপার বলে মনে করেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ট্রাক ব্যবসায়ী জানান, বছরে মাত্র ছয় মাস বিভিন্ন ইটভাটায় তার বেশ কয়েকটি ট্রাক মাটি ও ইট আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। বছরের অন্য ছয় মাস তার ট্রাকগুলো অলস পড়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে ট্রাকগুলোতে ফিটনেস না থাকায় এখন নতুন করে ফিটনেস করানো বেশ ব্যয়বহুল বলেও জানান তিনি। তবে, ফিটনেস ছাড়া কীভাবে মহাসড়কে তার ওই ট্রাকগুলো চলাচল করছে এমন প্রশ্নের কোন উত্তর করতে চাননি তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ট্রাক চালক জানান, লাইসেন্স করার বিষয়টি এখন জটিল হওয়ায় লাইসেন্স করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে লাইসেন্স না থাকায় কোন ঝামেলায় পড়লে ট্রাকের মালিক বিষয়টি সুরাহা করে থাকেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল আলম ফিটনেস ছাড়া ট্রাকগুলো মহাসড়কে চলাচলের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে জানান, নিয়মিতভাবে ওই সমস্ত ট্রাক ও চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। মহাসড়ক থেকে এসব ট্রাক চলাচল বন্ধ করার জন্যে ডাম্পিং ব্যবস্থাই একমাত্র উপায়। কিন্তু ট্রাকগুলোকে ডাম্পিং করার ক্ষমতা তার নেই বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৭
আরএ