ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সভা-সমাবেশে আসামি, খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
সভা-সমাবেশে আসামি, খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ! ফেসবুকে-মিছিলে সক্রিয় মো. রমিজ উদ্দিন

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শকের (এসআই) দায়ের করা মাদক মামলার আসামি রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সর্বত্র ঘুরে বেড়ালেও তাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। মো. রমিজ উদ্দিন নামে ওই আসামি আবার দাবি করেছেন, রাজনৈতিক কোন্দলের জেরে তাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। তিনি কোনো মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত নন।

রমিজ উদ্দিন জেলার সিংগাইর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। ২১ সেপ্টেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলাটিতে তার সঙ্গে কুকিল নামের একজনসহ মোট তিনজনকে আসামি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আশিষ কুমার বাংলানিউজের কাছে দাবি করেছেন, বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।

মামলার তথ্যসূত্র ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর সিংগাইর উপজেলার চর আজিমপুর এলাকা থেকে ৩০ পিস ইয়াবা ও নগদ ২৬ হাজার টাকাসহ ইমরান নামে এক যুবককে আটক করা হয়। পরে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ সেপ্টেম্বর রমিজ উদ্দিন ও কুকিলসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।  

আনোয়ার হোসেন জানান, মামলার পর এই বিষয়টি নিয়ে তিনি আর তেমন কিছু জানেন না। এক্ষেত্রে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশিষ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, রমিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। কয়েকদিনের মধ্যে মামলার চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। তবে রমিজ ও কুকিলকে গ্রেফতারে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেও ফল পাওয়া যায়নি।

কিন্তু  রমিজ উদ্দিন উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই জানান, ব্যস্ততার কারণে সব সময় অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। তবে সিংগাইর গেলে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়।  

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা দীর্ঘ আড়াই মাস অতিক্রম হয়ে গেলেও আসামিরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকায় বিভিন্ন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

জানা যায়, গত ১১ নভেম্বর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কেক কাটা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মমতাজ বেগম ও রমিজ উদ্দিন পরস্পরকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক খাইয়ে দেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিংগাইর থানার পুলিশ কর্মকর্তারাও।  

এরপর বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় গত ২৫ নভেম্বর সিংগাইর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আনন্দ মিছিলেও অংশ নেন রমিজ উদ্দিন। এ অনুষ্ঠানে মমতাজ বেগম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) যুবায়ের হোসেন, থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেনসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শোভাযাত্রার অগ্রভাগের এক পাশে দেখা যায় রমিজ উদ্দিনকে।  

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রমিজ উদ্দন বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, পুলিশের হাতে ইয়াবাসহ গ্রেফতার ইমরান তার এলাকার ছেলে হলেও তিনি কখনো ইমরানের সঙ্গে কথা বলেননি। রাজনৈতিক কোন্দলের কারণেই তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের হয়েছে। তিনি কোনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।