ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফুটপাত দখল, যত্রতত্র পার্কিংয়ে ভোগান্তির পান্থপথ! 

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
ফুটপাত দখল, যত্রতত্র পার্কিংয়ে ভোগান্তির পান্থপথ!  এভাবেই যত্রতত্র পার্কিংয়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, বাড়ছে ভোগান্তি

ঢাকা: রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা পান্থপথ। নগরীতে চলাচলের অন্যতম ব্যস্ত সড়কও পান্থপথ। তবে যত্রতত্র পার্কিং আর ফুটপাত দখলে বেহাল রূপ ধারণ করেছে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি। এতে দীর্ঘ যানজটে এ রুটে যাতায়াতকারীদের যেমন অসহায়ত্ব বরণ করতে হচ্ছে, তেমনি পথচারীদেরও পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।

পান্থপথ ঘুরে দেখা যায়, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশার যত্রতত্র পার্কিংয়ের পাশাপাশি রাস্তার উপর গ্যারেজ ও পরিবহন মেরামতের কাজ এবং গণপরিবহনগুলোর চলাচলে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে দিনরাত সারাক্ষণই যানজট লেগে থাকে সড়কটিতে।  

এসবের মধ্যে যত্রতত্র পার্কিংকেই পান্থপথ সড়কের যানজটের মূল কারণ বলে জানান দায়িত্বরত ট্রাফিক-পুলিশরা।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দিনভর সড়কটিতে অবস্থানের সময় দেখা যায় রাস্তার উপর যত্রযত্র গাড়ি পার্কিংয়ের দৃশ্য। এ সড়কের উভয় পাশে গড়ে ওঠেছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি হাসপাতাল। নির্দিষ্ট পার্কিং না থাকায় এসব হাসপাতালে আসা ওষুধ বহনকারী পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্স, রোগীর আত্মীয়-স্বজনের প্রাইভেটকার রাস্তায় পার্কিং করা হয়েছে।

এছাড়া রাস্তা উপরে ওষুধ কোম্পানির মার্কেটিং প্রতিনিধিদের সারি সারি মোটরসাইকেল পার্কিং করে সড়কটি সংর্কীণ হয়ে পড়েছে। ব্যস্ততম সড়ক তার উপর প্রশস্ত না হওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। যত্রতত্র পার্কিং যেন ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’।  

পান্থপথে অবস্থিত স্কয়ার হাসপাতালের সামনে সারিবদ্ধ মোটরসাইকেল দাঁড়ানো দেখে নিরাপত্তাকর্মীর কাছে হাসপাতালের পার্কিং ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে। তবে প্রতিদিন এতো বেশি রোগী আসেন তাদের গাড়ি জায়গা দিতে মাঝে মাঝে হিমশিম খেতে হয়। এজন্য অনেক সময় রাস্তার উপর গাড়ি পার্কিং করা হয়। তবে তা সাময়িক সময়ের জন্য।

রাস্তার উপর গ্যারেজ বানিয়ে মেরামত করা হচ্ছে গাড়ি  

এদিকে যত্রতত্র পার্কিং করে রাস্তা দখলের ফলে যে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে সে বিষয়ে পরিবহন চালকদের মধ্যে কোনো ভ্রুক্ষেপ দেখা গেলো না।  

আনিস নামে এক গাড়ি চালক বাংলানিউজকে বলেন, পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট জায়গা না থাকলে গাড়ি রাখবো কই? জায়গা না থাকায় রাস্তায় রাখি। কিচ্ছু করার নেই।

পান্থপথ মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সারোয়ার বলেন, এ সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত পরিবহন শৃঙ্খলার বিষয়ে নজর রাখে। অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা, রেকারিং করা হয়। তবে মানুষের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা না থাকায় মামলা-জরিমানা করেও কাজ হচ্ছে না। এজন্য ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতনতা প্রয়োজন।  

পান্থপথ মোড় পার হয়ে হক চেম্বারের বিপরীতে যত্রতত্র পার্কিং ছাড়াও ফুটপাত ও রাস্তা দখল কর গ্যারেজগুলোর কর্মচারীদের নির্দ্ধিধায় পরিবহন মেরামতের কাজ করতে দেখা গেলো। কাওরান বাজার মোড় থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর পর্যন্ত ফুটপাতের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হকারদের চা, ফলমূলের দোকান।  

পান্থপথের বাসিন্দা ইমতিয়াজ ওনি বাংলানিউজকে বলেন, পান্থপথ মোড়ের যানজট ঢাকা শহরের সবচেয়ে ভোগান্তির জট। এ এলাকায় গাড়ি চলাচলে কোনো নিয়ম নেই। লেগুনা, রিকশা ভ্যান, ঠেলাগাড়ি প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল সব একসঙ্গে চলে। ফুটপাতে হাঁটার পথটুকু পাবেন না। রাস্তার মাঝে গাড়ি পার্কিং। এতে নগরবাসীকে যে দুর্ভোগে পড়তে হয় তাতে কারো চিন্তা নেই।  

এছাড়া পান্থপথ সড়কে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন পরিবহনের বাসের কাউন্টারগুলোও যানজটের জন্য দায়ী বলে জানান পথচারীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এমসি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।