ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কিস্তি নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া, স্ত্রীর আত্মহত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
কিস্তি নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া, স্ত্রীর আত্মহত্যা

সিরাজগঞ্জ: বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি নিয়ে স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির জের ধরে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেছেন জরিনা খাতুন (২৮) নামে এক গৃহবধূ।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর আগে সকালে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাস কাউলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।



নিহত জরিনা খাতুন চৌহালী উপজেলার পশ্চিম খাসকাউলিয়া গ্রামের কৃষি দিনমজুর আব্দুর রউফের স্ত্রী।
চৌহালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোক্তার হোসেন রোববার দুপুরে বাংলানিউজকে জানান, নাগরপুর উপজেলার শাহজানী ভাড়রা ইউনিয়নের গ্রামীন ব্যাংকের শাখা অফিস থেকে ২০ হাজার টাকার ঋণ নিয়েছিলেন জরিনা। তার ছেলে নূরনবী ঢাকায় থাকেন। তিনি ওই কিস্তির টাকা পরিশোধ করতেন।

এছাড়াও জরিনা খাতুন ব্র্যাক থেকে নেয়া আরও ২০ হাজার টাকা ঋণের কিস্তি চালাতেন। অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে নিয়মিত কিস্তি চালাতেন তারা। তবে সংসার চালানোর পাশাপাশি কিস্তি চালাতে মাঝেমধ্যে সমস্যায় পড়তেন।

এ অবস্থায় রোববার সকালে গ্রামীন ব্যাংকের কিস্তি দেয়ার দিন ছিল। এদিন কোনোভাবেই তিনি কিস্তির টাকা সংগ্রহ করতে পারছিলেন না। এ কারণে শনিবার সকালে স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্বামী রউফ কাজে চলে গেলে জরিনা ঘরের দরজা বন্ধ করে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। টের পেয়ে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আগুনে তার শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ঢাকায় নেয়ার পথে রাত একটার দিকে তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি নাগরপুর থানায় হওয়ায় তারা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে জানান এসআই মোক্তার।

নিহত জরিনার স্বামী আব্দুর রউফের অভিযোগ, অভাবের কারণে সংসার চালানোর পাশাপাশি কিস্তির টাকা যোগার করতে সমস্যা হতো। এদিকে, অভাবের কথা শুনে গ্রামীন ব্যাংকের মাঠকর্মীরা কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এ নিয়ে তার স্ত্রী দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিল।

এ বিষয়ে গ্রামীন ব্যাংক ভাড়রা শাখা ম্যানেজার রঞ্জু আহমেদ বলেন, টাকার জন্য তাদের তেমন চাপ দেয়া হয়নি। জরিনার মৃত্যুর কথা শুনে আমরা তার বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের শান্ত্বনা দিয়েছি। পাওনা টাকা মওকুফসহ বীমার টাকা
পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছি।

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাঈন উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি কেউ থানায় অবগত করেনি। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।