মঙ্গলবার (০২ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
গণশিক্ষামন্ত্রী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সমাজ থেকে এ অভিশাপ দূর করতে হলে কার ছেলে কার মেয়ে মাদকের সঙ্গে জড়িত তা বিবেচনায় নিলে হবে না।
তিনি বলেন, জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে সবাইকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রয়োজন কেবল একটি সিদ্ধান্তের। এজন্য জাতীয় সংসদে একমাস আলোচনা হদে পারে, সংসদের বাইরে সুশীলদের সঙ্গে আলোচনা হবে, কথা হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। এভাবে তিনমাস আলোচনা করে জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতি জেলা শহরের বড় কোনো ময়দানে জড়িতদের ‘শ্যূট অ্যাট সাইট’ করতে হবে।
‘পৃথিবীর অনেক দেশেই এভাবে মাদক নির্মূল হয়েছে। আর না হলে লাখ লাখ লোকবল আর অস্ত্র দিয়ে এটা নির্মূল সম্ভব নয়। কারণ যারা নিয়ন্ত্রণ করবে তারাও এর সঙ্গে জড়িত। ’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত লোকবলসহ অন্যান্য সাপোর্ট পর্যাপ্ত নেই। নেই সহায়ক ব্যবস্থাও।
‘আগে ফেনসিডিল ভয়ঙ্কর ছিল এখন ইয়াবা সর্বনাশা মাদকদ্রব্য। আইন সংশোধন করে ইয়াবা বহনকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আনা হচ্ছে। ’
মাদক নির্মূলে দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। আগামী একবছরে অন্তত ৫০জন গডফাদারকে গ্রেফতার করা হবে।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি
বলেন, আমাদের জেগে স্বপ্ন দেখতে হবে। সরকার, রাজনৈতিক দলসহ সবাই যদি মাদক নির্মূলের স্বপ্নটা দেখি, তবেই এটা নির্মূল করা সম্ভব।
জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সদস্য ডা. অরুপ রতন বলেন, ইয়াবা এখন বড় সমস্যা। দেশের মূলবান জনগোষ্ঠী ৭০ লাখ যুবক মাদকাসক্ত। এরমধ্যে ৮০ শতাংশই তরুণ। এই তরুণদের মধ্যে এখন নারীরাও আসক্ত হচ্ছে। এটা খুব আতঙ্কের বিষয়।
‘মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে এ পর্যন্ত ২০০ মা-বাবা নিহত হয়েছেন। মাদকের ভয়াবহতা রুখতে কেবল যারা বহন করেন তারা নয়, গডফাদারদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ’
মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ নয়, নির্মূল করতে হবে। এক সময় ইয়াবা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে। তারা আইনে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি এনে তা কঠোরভাবে দম করেছে। আমাদেরও এ বিষয়ে কঠোর হওয়া দরকার। এজন্য সামাজিক প্রতিরোধও গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানের অন্যদের মধ্যে কারা অধিদফতরের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দীন আহমদ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ইমদাদুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭/আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা
ইইউডি/এমএ/