ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মৃত্যুঝুঁকি জেনেও শিলপাটা তৈরি করেন শ্রমিকরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৮
মৃত্যুঝুঁকি জেনেও শিলপাটা তৈরি করেন শ্রমিকরা শিলপাটা তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিক। ছবি: বাংলানিউজ

নওগাঁ: মসলা গুঁড়ো করার আদি পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয় শিলপাটা। এই শিলপাটা তৈরি করা হয় পাথর কেটে। কিন্তু এ কাজে মৃত্যুঝুঁকি আছে জেনেও বেশি আয়ের আশায় তা করে যাচ্ছেন শিলপাটা শ্রমিকরা।

জানা যায়, পার্শ্ববর্তী জেলা জয়পুরহাটে ছিলো শিলপাটা তৈরির কারখানা। জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনের অভিযানে সেখানকার কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর জয়পুরহাট থেকে নওগাঁয় তারা কারখানা গড়ে তোলে।  

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এই পাথরের গুড়া নিঃশ্বাসের ভেতর দিয়ে আমাদের শরীরের ঢোকে। আমাদের অনেক সমস্যা হয়। এই কারখানার পাশ দিয়ে উপজেলায় যাওয়ার প্রধান রাস্তা। এই শিলপাটা কারখানার জন্য এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। আমরা এলাকাবাসী বহুবার কারখানাটি এখান থেকে সরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।

শিলপাটা কারিগর আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে জানান, এই কাজ করলে আমরা বেশি দিন বাঁচবো না এটা আমরা জেনে শুনেই করছি। কাজ করার সময় পাথরের গুড়ো নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকে পড়ে। এরপর বছর খানেকের মধ্যেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট, ক্ষুধা মন্দা। আর সব সময় গায়ে জ্বর থাকে। একটা সময় শরীর দুর্বল হয়ে যায়। আর আগে আমাদের এলাকায় একাজ করে অনেক কারিগরের মৃত্যু হয়েছে।  

তিনি আরো জানান, এ কাজে অল্প সময়ে বেশি টাকা আয় করা যায়। একটি পাটা এবং একটি শিল কেটে তৈরি করলে আমরা ৪০ টাকা পাই। একজন কারিগর দিনে প্রায় ১২ থেকে ১৫টা শিলপাটা তৈরি করে।  

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. তৌফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, পাথরের গুঁড়া ফুসফুসে ঢুকে পড়ে। এতে ফুসফুসের স্থায়ী ক্ষতি (ফাইব্রোসিস) করে। পরে এটি মারাত্মক অাকার ধারণ করে। যার কোনো চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই।  

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এ শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তাদের এই পেশা থেকে সরিয়ে অন্য কোনো পেশা গ্রহণ করার জন্য আমরা কাজ করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।