ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খাঁচায় মাছ চাষে লাভ বেশি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৮
খাঁচায় মাছ চাষে লাভ বেশি উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচায় মাছ চাষ। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচায় মাছ চাষের প্রতি চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে মৎস্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বাগেরহাটে ৪০টি খাঁচায় পরীক্ষামূলকভাবে তেলাপিয়ার চাষ শুরু হয়েছে। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে স্বল্প ব্যয়ে কম সময়ে বেশি লাভবান হওয়া যায়।

‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প’-এর সহযোগিতায় জেলার বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপাল ও মোড়েলগঞ্জে পরীক্ষামূলকভাবে এভাবে মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে।

বাগেরহাট মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি উপজেলায় ২০ জন চাষিকে একত্র করে একটি দল তৈরি করা হয়।

এদের ওই এলাকার সুবিধামত স্থানে উন্মুক্ত জলাশয়ে ১০টি খাঁচা তৈরি করে দেওয়া হয়। নেট, নেটের জাল, বাস ও প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে বিশেষভাবে এ খাঁচা তৈরি করা হয়। প্রতিটি খাঁচা ২০ ফুট লম্বা ও ১০ ফুট চওড়া থাকে। একটি খাঁচা তৈরি করতে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। একবার তৈরি করলে ১০ বছর পর্যন্ত খাঁচাগুলো ব্যবহার করা যায়। প্রতিটি খাঁচায় ৮০০ থেকে এক হাজার তেলাপিয়ার পোনা চাষ করা যায়। তিন মাস পরে পোনাগুলো বিক্রি করা যায়। এতে প্রতিটি খাঁচা থেকে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়।

উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচায় মাছ চাষ।  ছবি: বাংলানিউজকচুয়া উপজেলার চরকাঠি গ্রামের একটি খালে ১০টি খাঁচার সমন্বয়ে একটি খামার করা হয়েছে। সেখানে কথা হয় চরকাঠি গ্রামের সমন্নিত মৎস্য চাষি সমিতির সভাপতি পাইক নজরুল ইসলামের সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিসের সহযোগিতায় আমরা এলাকায় ১০টি খাঁচায় তেলাপিয়ার চাষ করি। খাঁচায় চাষ করার কারণে পরিমাণমত খাবার দেওয়া যায়। মাছের কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। যার ফলে লাভও ভাল হয়।

কচুয়া উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিপুল পাল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কচুয়া উপজেলার চরকাঠি গ্রামের ২০ জন প্রান্তিক চাষিকে একত্রিত করে একটি গ্রুপ তৈরি করেছি। তাদের নামে একটি যৌথ ব্যাংক হিসাব খুলে সেখান থেকে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করা হয়। মাছ বিক্রির লভ্যাংশও ওই হিসাবে জমা হয়। পরে ওখান থেকে চাষিরা টাকা ভাগ করে নেয়। উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচায় মাছ চাষ।  ছবি: বাংলানিউজবাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া হায়দার চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে চাষের কারণে মাছের মৃত্যুহার অনেক কম থাকে। এজন্য খাঁচায় মাছ চাষ খুবই লাভজনক। মাত্র তিন মাসেই চাষিরা তাদের মাছ তুলতে পারেন। খাঁচায় মাছ চাষ করে বিনিয়োগের প্রায় ৪০ শতাংশ লাভ করা যায়।  

এজন্য চাষিদের মৎস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করতে জেলার চারটি উপজেলার চারটি জলাশয়ে মোট ৪০টি খাঁচায় পরীক্ষামূলকভাবে তেলাপিয়ার প্রদর্শনী খামার করা হয়েছে। এসব প্রদর্শনী খামার দেখে অনেক চাষি উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষে এগিয়ে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।