ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মানুষের ভোটাধিকারের কথা চিন্তা করে সংলাপে বসেছি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৮
মানুষের ভোটাধিকারের কথা চিন্তা করে সংলাপে বসেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ফটো

ঢাকা: দেশের মানুষের ভোটাধিকারের কথা চিন্তা করে সরকারি জোট সংলাপে বসেছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ শান্তিতে ভোট দিতে পারুক, তাদের মন মতো সরকার বেছে নিক; সেই চিন্তাটা করেই কিন্তু আমরা সংলাপে বসেছি। ’
 
শনিবার (০৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জেল হত্যা দিবসে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এত অপমান, এত কিছু- সব সহ্য করেও আমরা শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে, দেশের মানুষের শান্তিতে থাকুক, দেশের মানুষ তার ভোটটা শান্তিতে দিতে পারুক। দেশের মানুষ তার মন মতো সরকার বেছে নিক, সেই চিন্তাটা করেই কিন্তু আমরা সংলাপে বসেছি। আলোচনা করেছি। ’
 
‘অধিকাংশ সময় তারাই কিন্তু কথা বলেছে। আমি কিন্তু একটা কথাও বলিনি। প্রায় দুই ঘণ্টা পর্যন্ত জোটের যারা তারা কথা বলেছেন। এরপর আমাদের পক্ষ থেকে কথা হয়। ’
 
তিনি বলেন, ‘একেবারে সর্বশেষ সমাপ্তির জন্য যেটুকু বলার আমি শুধু সেই টুকু বলেছি- যে কোন কোনটা আমরা করতে পারি, কোনটা নির্বাচন কমিশনের, কোনটা রাষ্ট্রপতির। …অনেকগুলো দাবি আমরা মেনেও নিয়েছি। ’
 
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, সেই নির্বাচন সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্ট চিঠি দিলো তারা আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চান- আমি সাথে সাথে স্বাগত জানালাম। আমি অনেক ব্যস্ততার মাঝেও – আপনারা দেখেছেন ময়মনসিংহ পাবলিক মিটিং করে এসেও আমরা আলোচনা করেছি। ’
 
‘ইতোমধ্যে ঐক্যফ্রন্ট এবং যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে মিটিং হয়ে গেছে। তারা আলাপ করতে চেয়েছে, সংলাপ করতে চেয়েছে আমরা করেছি। সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘তারা যে সকল দাবি দাওয়া দিয়েছেন, যেসব দাবি দাওয়া আমাদের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব আমরা বলেছি সেটা করবো। ’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন আলোচনা চলছে তখন দেখলাম আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়। একদিকে আলোচনা করবে আর একদিকে আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া, এটা কি ধরনের সংলাপ, কি ধরনের কথা, আমাদের কাছে এটা বোধগম্য নয়। ’
 
১৯৯৬ সালের ৫ বছর এবং টানা গত দুই টার্ম মিলিয়ে ১৫ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বপালনকারী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে যে গণতান্ত্রিক ধারা চলছে, আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতাটা থাকুক। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে দেশ উন্নত হয়। ’
 
নির্বাচন কমিশন নিয়ে অভিযোগের সুযোগ নেই
বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে সেটাও আমাদের নেতা-কর্মীদের জানা উচিত। সেখানে কিন্তু সার্চ কমিটি করা হয়েছিল। মহামান্য রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি করেছিলেন। সেই সার্চ কমিটিতে নামের তালিকা বিএনপিও দিয়েছে। আমরাও দিয়েছি। প্রতিটি দল থেকে সার্চ কমিটিতে নাম গেছে। ’
 
‘সার্চ কমিটি আমাদের দল থেকে একজন, বিএনপি থেকে একজন, অন্যান্য দল থেকে নিয়ে তারা নির্বাচন কমিশন গঠন করে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। কাজেই এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোন অভিযোগ থাকার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। ’
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন প্রতিটি নির্বাচন করেছে স্বচ্ছতার সাথে। যা রেজাল্ট দিয়েছে সেটাই মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমাদের জায়গায় যদি বিএনপি থাকতো তারা কি সিটি করপোরেশন বা অন্যান্য নির্বাচনে হারাটা মেনে নিতো? মানতো না। তারা ঠিকই ভোট কারচুপি করতো বা একটা অঘটন ঘটাতো। ’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ৫ বছরে আমরা প্রায় ৬ হাজারের মতো নির্বাচন হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে, ১৫টির মতো উপ-নির্বাচন হয়েছে। ৬ হাজারের মতো যে নির্বাচন হল একটা নির্বাচন নিয়েও তো কেউ কোন কথা বলতে পারেনি। ’
 
‘সেখানে আমরা কোন রকম হস্তক্ষেপ করিনি। কারণ জনগণ ভোটের মালিক, জনগণ ভোট দেবে। নির্বাচন কমিশন আছে স্বাধীন ভাবে। ’
  
বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন, কাউকে রাজনৈতিক গ্রেফতার করিনি
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বলেছে রাজবন্দীদের মুক্তি চাই। আমি বলেছি তালিকা দেন। আমরা তো রাজবন্দী করি নাই। আমরা তো কাউকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করি নাই।
 
তিনি বলেন, তাই যদি করতাম তাহলে তো ২০১৫ তে খালেদা জিয়া যখন মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তখনই তো তাদের গ্রেফতার করতে পারতাম, সেটাও আমরা করি নাই। কাজেই আমরা তো রাজনৈতিক কারণে কাউকে গ্রেফতার করি নাই।
 
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়কার মামলায় খালেদা-তারেকের সাজা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা, এসব মামলা করেছে তাদেরই আপনজন।
 
‘ আর বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। স্বাধীন বিচার বিভাগ যে রায় দিয়েছে সেই রায়ে খালেদা জিয়া এখন সাজা ভোগ করছেন। তারেক জিয়া ভোগ করছেন। আন্তর্জাতিকভাবেও প্রমাণিত তারা দুর্নীতিবাজ, সেখানে আমাদের করার কী আছে,’ বলেন আওয়ামী লীগ সভঅপতি।  
 
আওয়ামী লীগ শুধু জনগণকে দিতে জানে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের সোপান বেয়ে এগিয়ে নেওয়ার একটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। যে দলটা শুধু বাংলাদেশের জনগণকে দিতে জানে।
 
‘ এসব সম্ভব হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এদেশের উন্নতি হয়। আমাদের লক্ষ্য একেবারের গ্রামের মানুষটাও যেন দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি পায়। প্রতিটি গ্রাম যেন শহরে উন্নীত হয়,’ যোগ করেন তিনি।  
 
সভায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৮/আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা
এমইউএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।