ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মায়ের মরদেহ গ্রহণ করলো ছেলে, আন্দোলনের হুমকি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৮
মায়ের মরদেহ গ্রহণ করলো ছেলে, আন্দোলনের হুমকি রওশন আরা (চিকিৎসার সময়ের ছবি)

ঢাকা: অবশেষে চিকিৎসকদের ভুলে দুই কিডনি হারানো রওশন আরা বেগমের মরদেহ গ্রহণ করেছে তার পরিবার। 

রোববার (৪ নভেম্বর) পাবনায় দাফনের পর বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও আইনি প্রক্রিয়ায় নামবেন মৃতের ছেলে রফিক সিকদার।  

শনিবার (৩ নভেম্বর) রওশন আরার ছেলে চলচিত্র পরিচালক রফিক তথ্যটি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।


 
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের পর শনিবার বিকেলে মরদেহ আমরা গ্রহণ করেছি। মাকে নিয়ে পাবনা যাচ্ছি। রোববার সকালে দাফন শেষ করে আবার ফিরে আসবো। এরপরই চলচিত্র সংসদের সংঘবদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু হবে ঢাকায়। আমরা মানববন্ধন করবো আর আইনি প্রক্রিয়ায় মামলা করে আদালতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিচার চাইবো। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ আমাকে আমার দাবি মতো বা সঠিক ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই, কারণ আমি চাই না আর কোনো সন্তান যেন তার মাকে এভাবে না হারায়।
 
এর আগে শনিবার বিকেলে চলচ্চিত্র পরিচালক রফিকের মা রওশন আরার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, মরদেহের ভেতরে কোনো কিডনি পাওয়া যায়নি। তবে মরদেহ থেকে রক্ত ও মস্তিষ্কের কিছু অংশ সংগ্রহ করে হিস্টোপ্যাথলজিতে পাঠানো হবে। সেখানকার প্রতিবেদন এলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রওশন আরার মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকদের দায়ী করে রফিক ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নেবেন না জানিয়ে দিলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের অপর দুই চিকিৎসক ছিলেন ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক প্রদীপ বিশ্বাস ও কবির সোহেল।

মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে ডা. সোহেল মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, মরদেহে কোনো কিডনি পাওয়া যায়নি। তবে মরদেহে কয়েকটি ও মাথায় দু’টি টিউমার পাওয়া গেছে।  
 
বাম পাশের কিডনি জটিলতার কারণে গত ২৬ আগস্ট বিএসএমএমইউতে ভর্তি করানো হয় রওশন আরাকে। তার ছেলে রফিকের দাবি, হাসপাতালে বেশ কিছু পরীক্ষা করানোর পর গত ৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসকরা বাম পাশের কিডনি রাখতে চাননি। বাম কিডনি তখন কিছুটা কাজ করছিল। আর ডান পাশের কিডনি পুরোপুরি ভালো ছিল।
 
তখন অন্য হাসপাতালে নেয়া হলে সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে তার শরীরে কোনো কিডনি নেই। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর ঘটনা তদন্তে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি ও একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে।
 
এরপর ১ অক্টোবর চিত্র পরিচালক রফিক ও অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলালের মধ্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তিতে লেখা রয়েছে, চিত্র পরিচালক রফিকের মা রওশন আরার চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাম কিডনি অপারেশনের পর চিকিৎসক অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে উভয় কিডনি হারানোকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে এ চুক্তি সম্পাদিত হল।
  
এছাড়া চুক্তির শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে, রফিকের মায়ের কিডনি প্রতিস্থাপনসহ এর পরবর্তী সব খরচ দ্বিতীয় পক্ষ বহন করবে। কিডনি প্রদানকারী রোগীর ছোট বোনকে নগদ ৮ লাখ টাকা দেয়াসহ অপারেশন পরবর্তী সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় খরচাদি দ্বিতীয় পক্ষ বহন করবে।

** রফিকের মায়ের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন: মরদেহে মেলেনি কিডনি
  
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৮
এমএএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।