মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার চলাকালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলিতে পুলিশের ভূমিকা ভীষণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল।
কোনো পুলিশ কর্মকর্তার নাম না বলে তিনি অভিযোগ করেন, ‘যে কর্মকর্তা পুলিশের সদর দফতরে বসে গতবার পরিকল্পনা করেছিলেন, সেই একই পুলিশ কর্মকর্তা আবারও সেখানে বসেই নীল-নকশা তৈরি করছেন। এই নির্বাচনকে কীভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে নেওয়া যায়, কীভাবে কারচুপি করা যাবে- সে বিষয়ে নীল নকশা হচ্ছে। অবিলম্বে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আশা করি নির্বাচন কমিশনের বোধদয় হবে, তারা জেগে উঠবে। সাংবিধানিকভাবে যে দায়িত্ব ও ক্ষমতা রয়েছে সে ক্ষমতা দায়িত্ব প্রয়োগ করে তারা তাদের কাজ করবে।
‘আমরা অবিলম্বে পুলিশ কর্মকর্তাদের যে পরিবর্তন চেয়েছিলাম, তার-ই ধারাবাহিকতায় প্রত্যেক জেলার কর্মকর্তা ও যিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে বসে এই নীল-নকশা করছেন, তাকে অবিলম্বে হেডকোয়ার্টার থেকে বদলি করে দেওয়া অথবা ক্লোজ করে রেখে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ’
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নির্বাচন কমিশন যাদের ওপর দায়িত্ব বর্তেছে নির্বাচনকে সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য, লেভেল প্লেইং ফিল্ড করার জন্য- তার কোনোটাই তারা এখন পর্যন্ত পালন করছেন না। আমরা এ ব্যাপারে আমাদের প্রতিবাদ লিখিতভাবে জানিয়েছি। আবারও আজকে এই বিষয়টা তুলে ধরছি।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু এই নির্বাচন এখনই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত তার কোনো দায়িত্ব পালন করছে না। আমরা দেখেছি যে, পুলিশ একইভাবে তফসিল ঘোষণার পরও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করছে। একইভাবে জামিনের জন্য যারা যাচ্ছেন বা যারা জামিন পাচ্ছেন তাদের জামিন বিলম্বিত করা হচ্ছে, বের করা হচ্ছে না।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার দেখছি না বরং অবৈধ অস্ত্রের নামে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার দেখছি। এ বিষয়গুলো একটা নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের একেবারে বৈপরীত অবস্থায় চলছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, এই নির্বাচন কমিশন নিজেরাই একটা অবস্থান নিয়ে নিয়েছেন যে তারা নির্বাচন সুষ্ঠু করবেন না।
প্রশাসনে রদবদল ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি প্রশাসনে রদবদল চাই। প্রশাসনে নিরপেক্ষ যারা আছেন তাদের বিভিন্ন জেলায় নিয়োগের কথা বলেছি। ’
‘সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে দশদিন আগে নিয়োগের দাবি জানিয়েছি। এ বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশন কিছু করছে না বা কিছু বলছেন না। আমরা আগেই বলেছি কমিশন সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায় কি-না সে বিষয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ’
কারা মনোনয়ন পেয়েছেন কিংবা তাদের তালিকা প্রকাশ হবে কবে? জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, শিগগিরই! সময় মতো হয়ে যাবে।
তবে জোটকে কতটি আসন দেবেন? জানতে চাইলে কোনো জবাব দেননি বিএনপি মহাসচিব।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার তৃতীয়দিনের মতো দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের ৩৬টি আসনের ২৬৯ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
বিকেলে নেওয়া হচ্ছে কুমিল্লা ও সিলেটের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার। বুধবারও সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
এমএইচ/এমএ