ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আদালতের আদেশে কেআইবি’র নির্বাচন স্থগিত

শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
আদালতের আদেশে কেআইবি’র নির্বাচন স্থগিত

ঢাকা: কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি)  ২০১৯-২০ মেয়াদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন আদালতের আদেশে স্থগিত করা হয়েছে। কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক ও কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান মনোনীত ছালেহ আহমদ-মোয়াজ্জেম হোসেন পরিষদের পক্ষে কৃষিবিদ ড. আজিজুল ইসলাম ভোটার তালিকায় ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ তুলে আদালতে রিট আবেদন করেন।

রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের ৪র্থ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ নির্বাচনের উপর একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন।  

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে কেআইবি নির্বাচনের উপর হাইকোর্টের একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ কেআইবি নির্বাচন কমিশনের কাছে আসে।

এরপর আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত করেন কমিশনের চেয়ারম্যান।  

নির্বাচন কমিশনের কাছে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কেন স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত।

এদিকে নির্বাচন স্থগিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোটাররা। নির্বাচন স্থগিতের তথ্য না থাকায় অনেক ভোটার ভোট দিতে এসে ফিরে গেছেন। নির্বাচনে ছালেহ-মোয়াজ্জেম পরিষদ পরাজয়ের ভয়ে ও নির্বাচন বানচাল করতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হাইকোর্টে থেকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এনেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নীতীশ-প্রিন্স পরিষদ সমর্থিত কৃষিবিদ নেতারা।  

এ বিষয়ে রিট আবেদনকারী ড. আজিজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

তবে কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, ভোটার তালিকায় ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে বারবার বলার পরও তা আমলে নেওয়া হয়নি। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হই।  

নির্বাচন কমিশনার কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভোটার তালিকার বিষয়ে যেসব বিষয়ে অভিযোগ ছিল সেসব এক সপ্তাহ আগেই নিষ্পত্তি করা হয়েছে। তারা সংশোধিত ভোটার তালিকা মেনেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে তারা নির্বাচনের আগের রাতে আদালতের মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিত করে।  

এ বিষয়ে শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় কেআইবি’তে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন নাসিম মনোনীত অধ্যাপক নিতীশ চন্দ্র দেবনাথ-খায়রুল আলম প্রিন্স পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।  

সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব প্রার্থী খায়রুল আলম প্রিন্স বলেন, দুই মাস আগে আমরা ভোটার তালিকা খসড়া, পোলিং ও রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছি। ভুল হয়ে থাকলে তখন আপত্তির সুযোগ ছিল। কিন্তু তখন তারা কিছুই করেনি। নির্বাচনের আগের দিন নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে গভীর ষড়যন্ত্র করে এ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এনেছে।

সংবাদ সম্মেলনে কেআইবির বর্তমান সভাপতি এ এম এম সালেহ বলেন, নৈতিকভাবে তারা পরাজিত হয়েছেন। বাদী নিজেও নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়েছেন। কিন্তু শেষ সময়ে ভোটারদেও মনোভাব বুঝতে পেরে নির্বাচন করতে সাহস পাচ্ছেন না। নির্বাচন কমিশন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় নির্বাচন স্থগিত করেছেন।

তিনি আরো বলেন, এ নির্বাচন কেন স্থায়ীভাবে স্থগিত করা হবে না তা জানতে চেয়ে আদালত কর্তৃক ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কারণ দর্শালে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কেআইবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে নির্বাচন ৩ মাস পেছানোর নিয়ম আছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।

চলতি বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৩ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশের ৫১টি ও অস্ট্রেলিয়ার একটি কেন্দ্রসহ মোট ৫২টি কেন্দ্রে ১৪ হাজার ভোটারের ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এতে কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন নাসিম, এমপি মনোনীত দু’টি পরিষদ ও কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক ও কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এমপি মনোনীত দু’টি করে পরিষদ অংশগ্রহণ করে। উভয় পক্ষ নির্বাচনের জন্য সারা দেশে প্রচারণা চালায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন স্ট্যাটাস ও মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তা দিয়ে দু’পক্ষই ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। তবে নীতীশ-প্রিন্স পরিষদেও ভোট ব্যাংক বেশি থাকায় বেকায়দায় পড়ে গেছে ছালেহ-মোয়াজ্জেম পরিষদ। পরাজয় আটকাতেই তারা আদলতের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে মনে করছেন কৃষিবিদ নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৮
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।