ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রিকশা-ভ্যানচালকদের জীবনযাত্রা-সামাজিক নিরাপত্তার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
রিকশা-ভ্যানচালকদের জীবনযাত্রা-সামাজিক নিরাপত্তার দাবি বিলসের সম্মেলন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর রিকশাচালকদের সংগঠিত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চলছে। তবে এজন্য মালিক-শ্রমিকদের একত্রিত হওয়াটা অত্যন্ত আবশ্যক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) সম্পাদক ও শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম।

রোববার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিলসের আয়োজনে ‘ঢাকার রিকশা-ভ্যানচালকদের জীবনযাত্রা, অধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সম্মেলনে রিকশাচালকদের লাইসেন্স দেওয়া, রিকশা শ্রমিকদের জন্য মানসম্মত থাকার জায়গা, স্যানিটেশনের ব্যবস্থা, খাবার পানির ব্যবস্থা, নম্বর প্লেটের জন্য সিটি করপোরেশনের কাছে আবেদনের বিষয়ে দাবি জানান বক্তারা।

ঢাকার রিকশা-ভ্যানচালকদের জীবনযাত্রা, অধিকার এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনা, দাবিনামা অনুমোদন, পরামর্শ ও মতামত গ্রহণসহ ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা নেওয়ার জন্যই এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে রাজধানী রিকশা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম গিয়াস উদ্দিন বলেন, রিকশাচালকদের কোনো লাইসেন্স নেই, সিটি করপোরেশন থেকে চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করা হয়। রিকশাচালকদের আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি। গ্রামে ক্ষেত-খামারে কাজ করা দিন মজুররাই রিকশাচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এ ক্ষেত্রের শ্রমিকরা প্রশাসন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ দ্বারা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হলেও রিকশাচালকদের কোনো সংগঠন না থাকায় তাদের অভিযোগ পুলিশ নেয় না। এমনকি রিকশাচালকরা মারা গেলে তাদের মরদেহ দাফনের জন্য পথচারীদের কাছ থেকে সাহায্য নিতে হয়।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে কত রিকশা চলবে, তা সিটি করপোরেশন থেকে নির্ধারণ করা উচিত। রিকশা ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের মানবিকতার বিষয়টি বিবেচনায় এনে চালকদের সার্বিক উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি।

বাংলাদেশ রিকশা মালিক ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হারুন অর রশীদ খান বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোর কোনো মালিক নেই। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের থাকার জন্য কোনো জায়গা নেই এবং রিকশা রাখার জন্যও কোনো গ্যারেজ পায় না তারা। এ রিকশাগুলোতে দুর্ঘটনাও বেশি হয়। রিকশার লাইসেন্স না থাকায় চালকদের তুলনায় মালিকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এসময় তিনি রিকশাচালকদের থাকার জায়গার সুপরিবেশ নিশ্চিতকরণের ওপর তিনি গুরুত্ব নেন। একইসঙ্গে বিলসের প্রকাশিত দাবিনামা থেকে মূল বিষয়গুলোকে সুনির্দিষ্টকরণের মাধ্যমে একটি সংক্ষিপ্ত দাবিনামা প্রস্তুত করে অতিসত্বর তা প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, রিকশাচালকদের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনগুলোর ভূমিকার ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটা অধ্যায় থাকলে ভালো হতো। রিকশা ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়ন একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রিকশাচালকদের আচরণগত ব্যবহারবিধি, তাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, মামলা-মোকাদ্দমা পরিচালনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন অবদান রাখতে পারে। এছাড়া রিকশাচালকদের হেলথ কার্ড দেওয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাম্পের আওতায় আনার বিষয়ে দাবিও সময় উপযোগী।

বিল্স ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান ভূঞা’র সভাপতিত্বে এবং বিল্স যুগ্ম-মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক মো. জাফরুল হাসানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। দাবিনামা উপস্থাপন করেন সিনিয়র ট্রেড ইউনিয়ন প্রশিক্ষক খন্দকার আব্দুস সালাম। এসময় গবেষণার ওপর প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন  মোটরশ্রমিক লীগের সভাপতি ইনসুর আলী প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৮
এইচএমএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।