ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় সন্ধ্যা নামতেই পিঠা খাওয়ার ধুম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৮
খুলনায় সন্ধ্যা নামতেই পিঠা খাওয়ার ধুম শীতের পিঠা তৈরি করছেন বিক্রেতা

খুলনা: প্রকৃতির অমোঘ আগমন বার্তায় অনুভূত হচ্ছে শীতের ঠাণ্ডাভাব। হেমন্তে আমন ধান ঘরে উঠেছে। বাজারে এসেছে নতুন আতপ চাল ও খেজুর গুড়। পিঠা তৈরির এসব উপকরণ হাতে আসায় শীতকালীন পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই খুলনায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দোকান নিয়ে বসেন। মধ্যে রাত পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি।

এসব দোকানে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে।

মহানগরীর অলি-গলি, রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে, খোলা আকাশের নিচে অথবা দোকানে শীতের পিঠা বিক্রি করছেন পিঠা ব্যবসায়ীরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও শীতের পিঠা বিক্রি করছেন। সন্ধ্যা ছাড়াও অনেকে সকালেও পিঠা বিক্রি করেন।

তবে পিঠার জন্য সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত মহানগরীর ইসলামপুর রোডের তারের পুকুর পাড়ের নুরুল আলম, আলামিন ও রওশন আরার দোকান। এসব দোকানে বেশি তৈরি হয় চিতই, ভাপা, পাটি সাপটা, পান পিঠা। এখানে এলেই চারিদিকে শীতের পিঠার মৌ মৌ গন্ধ। আর এ গন্ধে মুগ্ধ হয়ে নানা পেশার লোকজনের ভিড় থাকে দোকানগুলো ঘিরে। আর এভাবেই শহরবাসী শীতের পিঠার আস্বাদন গ্রহণ করেন।

পিঠা কিনতে আসা এম রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, শহরের বাসা বাড়িতে আতপ চাল ও খেজুর গুড় কিনে পিঠা তৈরি করা অনেকটা ঝামেলার। যে কারণে প্রতি বছর এখান থেকে পিঠা কিনে থাকি।

সুধাংশু নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, প্রতিবছরই শীতের মৌসুমে এখানে পিঠা খেতে আসি। এখানের পিঠার মান ও স্বাদ অন্য স্থানের চেয়ে ভালো। শহরের মানুষের পিঠার চাহিদা মেটানোর জন্য রাস্তার মোড়ে, অলিগলিতে, ট্রেন ও বাসস্ট্যান্ডের দোকানগুলোই ভরসা।

তিনি জানান, নিজে শুধু পিঠা খেয়ে যান না, মাঝে মধ্যে পরিবারের জন্যও নিয়ে যান।

পিঠা খেতে ক্রেতাদের ভিড়তারের পুকুর পাড়ের পিঠার দোকানদার নুরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৮-১০টা চুলায় পিঠা তৈরি করে ক্রেতাদের দিতে হিমশিম খেতে হয়। ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর জন্য বাড়তি লোকও নিয়েছি। তারপরও পেরে উঠছি না।

তিনি জানান, তার দোকানে চিতই পিঠা প্রতি পিস ৩টাকা, তেলের পিঠা ৫টাকা, ভাপা পিঠা ১০টাকা, পাটি সাপটা পিঠা ১০টাকা দরে বিক্রি হয়। প্রতিদিন প্রায় ৭০-৮০ কেজি চালের গুড়ার চিতই পিঠা বিক্রি হয়। পিঠার সঙ্গে গুড়, সরিষা বাটা দেওয়া হয়। বসে খাওয়ার জন্য রয়েছে বেঞ্চও।

নুরুর পাশেই ভাপা পিঠা বিক্রেতা আল-আমিন বাংলানিউজকে বলেন, ২০-২৫ বছর ধরে এখানে পিঠা বিক্রি করি। পিঠার মান ভালো তাই ক্রেতাও বেশি। আমার দোকানে প্রতিদিন ১০-১২ কেজি চালের গুড়ার ভাপা পিঠা বিক্রি হয়। প্রতিটি পিঠার মূল্য ১০টাকা।

আল-আমিন জানান, শীতের পিঠা বিক্রি করে ভালোই লাভ হয়।

একই সড়কের রওশন আরা বলেন, স্বামী আমার খাওন খোরাকি দেয় না। তাই পিঠার দোকান দিয়েছি। ক্রেতা ভালোই। বাড়তি আয়ের জন্য পিঠার সঙ্গে সিদ্ধ ডিম বিক্রি করেন তিনি।

তারের পুকুর পাড়ের মতো মহানগরীর পশ্চিম রূপসা বাস স্ট্যান্ড, নতুন বাজার, ময়লা পোতা, খান জাহান আলী রোড, খালিশপুর, দৌলতপুর, পিটিআই মোড়, রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন মোড়ে মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা পিঠা তৈরি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৮
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।