মেজর আখতারুজ্জামানের আহত অবস্থায় ধারণ করা ভিডিওচিত্র ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মেজর আখতারুজামান তার ফেসবুক পেজে-(Akhtar Zaman) ঘটনার বর্ণনা দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন ‘‘আমার ছেলেকেও মারধর করে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল। কটিয়াদী থানার ওসিকে অনুরোধ করার পর সে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে যায় এবং পরে ছেড়ে দেয়। ছেড়ে দেয়ার সময় কিশোরগজ্ঞ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমার ছেলেকে স্পষ্ট করে বলে দেয় ধানাই পানাই না করে আমরা যেন নির্বাচন ছেড়ে চলে যাই। পুলিশ নাকি যে কোনো মূল্যে সাবেক আইজিপি নুর মোহাম্মদ সাহেবকে পাস করাবেই। গতরাতের ঘটনায় পুলিশ মামলা সাজানোর জন্য এসআই তরিকুল, এএসআই আলমগীর, এসআই নাজিউর রহমান, এএসআই নূর আহাদ, এএসআই বজলুর হুদা ও এসআই জহিরুল ইসলামকে কটিয়াদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ”
‘‘চারটি মোটরসাইকেল নাকি গুঁড়া করে ফেলা হয়েছে এবং দু’টি মোটরসাইকেল নাকি ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু সবাই মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থল থেকে থানায় ফিরে যায়। আমার সামনেই হাসপাতালে এএসআইদের দেখতে উপস্থিত হন এএসপি (অপরাধ) যখন ডাক্তাররা আমার চিকিৎসা করছিল, কিন্তু আমাকে একবারও জিজ্ঞাসা করলো না আমি কিভাবে আহত হলাম। তবে সিভিল কাপড়ে কেন তারা ডিউটি করতে গিয়েছিল তার জন্য কিঞ্চিত ভৎসনা করেছিলেন। পুলিশ রাষ্ট্রের একটি অতি প্রয়োজনীয় সিভিল অর্গান যা ছাড়া একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না। আমি দুইবার সংসদ সদস্য ছিলাম। আজকের পুলিশের আধুনীকরণ এবং বিশেষ করে কিশোরগজ্ঞ জেলা পুলিশের উন্নয়নে আমার ক্ষদ্রাতিক্ষুদ্র অবদান আছে। আমি বিশ্বাস করি পুলিশ ছাড়া আধুনিক সভ্য রাষ্ট্র কল্পনা করা যায় না। কিশোরগঞ্জের সাংবাদিকতার মান উন্নয়ন (করা) প্রয়োজন। গত রাতের ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নুনতম সম্পর্ক নাই অথচ জাতীয় মিডিয়াতে অবলীলাক্রমে প্রচারিত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে নাকি পুলিশ এবং আমরা আহত হয়েছি। অথচ ঘটনাস্থলে আওয়ামী লীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মীও উপস্থিত ছিল না। জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে বিশেষ করে টেলিভিশনে এ ধরনের বানোয়াট খবর পরিবেশন খুবই লজ্জাস্কর।
আমি ধন্যবাদ জানাই সাবেক আইজিপি ও নৌকার প্রার্থী জনাব নুর মোহাম্মদ সাহেবকে ঘটনাটির ব্যাপারে আমার খোঁজ খবর নেয়ার জন্য এবং আমাদের ওপর পুলিশের বেআইনি কার্যকলাপে দুঃখ প্রকাশ করার জন্য।
মেজর অব. আখতার, ধানের শীষের প্রার্থী। ’’
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে কটিয়াদী পৌরসভার বীর নোয়াকান্দি এলাকায় একটি উঠান বৈঠককে কেন্দ্র করে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী বাংলানিউজের কাছে অভিযোগ করেন, কটিয়াদী পৌরসভার বীর নোয়াকান্দি এলাকায় বিএনপিপ্রার্থী মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জনের উঠান বৈঠক চলছিল। এসময় পুলিশ এতে বাধা দিতে গেলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের তর্কাতর্কি হয়। পরে পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনা দেখে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন হামলায় নেতৃত্ব দেয়া পুলিশ সদস্যদের নিবৃত্ত করতে গেলে পুলিশ চড়াও হয়ে তার ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে আক্তারুজ্জামান রঞ্জন জখম হন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়া তার ছেলে মো. সাব্বির জামান রনিকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। পরে মুচলেখা রেখে তাকে ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, পুলিশের উপস্থিতি দেখে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে ধাওয়া দেয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হন।
এদিকে মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মেজর অব. আখতারুজ্জামান আহত অবস্থায় এলাকায় গণসংযোগে বের হন। নাকে আঘাত পাওয়ায় কথা বলতে তার সমস্যা হচ্ছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার পর একবার তিনি কল রিসিভ করেন। তবে পরিচয় জানার পর তিনি এ বিষয়ে কথা না বলে ফোন রেখে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
আরএ